মানিক ভাট্টাচার্যের নামে দুটি বৈধ পাসপোর্টের হদিশ দিল সিবিআই

নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে মানিক ভাট্টাচার্যের নামে বিরুদ্ধে ফের বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য এদিন আদালতে পেশ করল সিবিআই। বুধবার কলকাতা হাই কোর্টে কেন্দ্রীয় এই তদন্তকারী সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর  নামে দুটি বৈধ পাসপোর্ট রয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে এমন তথ্য পেয়ে বিস্মিত হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও। বিচারপতির প্রশ্ন, ‘এটা কী করে সম্ভব?’ এরই রেশ ধরে তাঁর মন্তব্য, ‘ছি ছি ছি ছি!এটা কী হচ্ছে!’ এরই রেশ ধরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এও জানান, ‘চারপাশে এত দুর্বৃত্ত, দিদি একা সামলাতে পারছেন না।’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘চারপাশে এত দুর্বৃত্ত থাকলে তিনি সামলাবেন কী করে?’ এ প্রসঙ্গেই ভূপেন হাজারিকার ‘হাজার টাকার বাগান খাইলো পাঁচ সিকার ছাগলে’ গানটিও এদিন স্মরণ করেন বিচারপতি।

এদিকে এদিন আদালতে সিবিআই এও জানায়, তারা কিছু এসএমএস উদ্ধার করতে পেরেছে। একইসঙ্গে তদন্ত প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কিছু সূত্রও মানিক ভট্টাচার্যর কাছ থেকে তাদের হাতে এসেছে। আদালত সূত্রে খবর, এদিন হাইকোর্টে সিবিআইয়ের তরফে প্রথমে জানানো হয়, হেফাজতে থাকা একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির দুটি বৈধ পাসপোর্ট রয়েছে। সেই কথা শুনে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রশ্ন করেন, ‘কার পাসপোর্ট? মানিক ভট্টাচার্যের?’ জবাবে সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়, ‘হ্যাঁ, মানিক ভট্টাচার্যের’। এরপরই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআইকে প্রশ্ন করেন, ‘মানিক ভট্টাচার্য কতবার লন্ডনে গিয়েছেন? তাঁর বাড়ির ঠিকানা জানেন?’ একইসঙ্গে বিচারপতির সংযোজন, ‘আমি বলতে পারি, শুনবেন? লন্ডনে তার বাড়ির পাশে কার বাড়ি জানেন? আমি জানি।’ এরপই বিচারপতি সিবিআইকে প্রশ্ন করেন, ‘সব তদন্ত আমি করলে তদন্তকারী আধিকারিক সোমনাথ বিশ্বাস কি করেছেন?’ একইসঙ্গে এদিন মানিক ভট্টাচার্যের এই দুটি পাসপোর্ট মেলার ঘটনায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের ক্ষোদোক্তি,  ‘মানিক ভট্টাচার্য এখনও বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেননি, এটা লজ্জার বিষয়। অর্থাৎ, তিনি ফিরে এসে আবার এ সব শুরু করবেন। রাজ্যটা কি এ ভাবে নষ্ট হয়ে যাবে?’

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই সিবিআই-এর এক তদন্তকারী আধিকারিক সোমনাথ বিশ্বাসকে সিটের থেকে সরানোর নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। সিবিআইয়ের তরফে এদিন মানিক ভট্টাচার্য সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতকে জানানো হয়, তারা কিছু এসএমএস উদ্ধার করতে পেরেছে। তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য মানিকের থেকে কিছু সূত্র পাওয়া গিয়েছে। তিন সপ্তাহ পরে তারা এই বিষয়ে রিপোর্ট পেশ করবে এবং তারপর যেন তদন্তকারী আধিকারিক সোমনাথ বিশ্বাসকে সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।কিন্তু বিচারপতি সাফ জানিয়ে দেন, না, নির্দেশ কোনও পরিবর্তন হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − one =