পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার বেশ তৎপরতার সঙ্গে পদক্ষেপ করতে দেখা যাচ্ছে সিবিআইকে। বুধবার রাজ্যের একাধিক জায়গায় একযোগে তল্লাশিতে নামেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা। কলকাতা থেকে জেলা, পুর ও নগরোয়ন্নয় দপ্তরের পাশাপাশি রাজ্যের একাধিক পুরসভায় তল্লাশিত চালান তাঁরা।যে সব পুরসভায় এই তল্লাশি অভিযান চলছে তার মধ্যে রয়েছে চুঁচুড়া, দক্ষিণ দমদম, নিউ ব্যারাকপুর, দমদম, পানিহাটি, কামারহাটি, শান্তিপুর সহ ১৪টি পুরসভা।
এদিকে সিবিআই সূত্রে খবর, মূলত নথি উদ্ধারের কারণেই এই পুরসভা গুলিতে তল্লাশি অভিযান চলছে।বুধবার কলকাতার নিজাম প্যালেসের সিবিআই দপ্তর থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে ১০০ জন সিবিআই আধিকারিককে ১৬টি দলে ভাগ হয়ে এই তল্লাশি অভিযানে বের হতে দেখা যায়। তাঁদের লক্ষ্য, পুরসভা গুলির আধিকারিক সঙ্গে নিয়োগ সংক্রান্ত ব্যাপারে কথা বলা।
সিবিআই সূত্রে খবর, ২০১৪ সালের পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভায় নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। মজদুর, ক্লার্ক, ঝাড়ুদার, গাড়ির চালক থেকে শুরু করে সব পদেই নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে দাবি করা হয়েছে। সিবিআই সূত্রে খবর, নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক পুরসভায় নিয়োগের ক্ষেত্রে বোর্ড অব কাউন্সিলরদের মিটিংয়ে প্রস্তাব পেশ করে তা পাশ করা হয়। পাশ হওয়া রেজিলিউশনে কোন কোন কাউন্সিলরের সই রয়েছে এবার সেই তথ্যও সংগ্রহ করবে সিবিআই। পাশাপাশি সিবিআই সূত্রে এও দাবি করা হচ্ছে, মোটা টাকা লেনদেনের মাধ্যমে ২০১৪ সাল থেকে রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভায় নিয়োগ হয়েছে। এই নিয়োগের পিছনে প্রভাবশালীদের একাংশের যোগ রয়েছে বলে মনে করছে সিবিআই। তদন্ত সেই সংক্রান্ত প্রমাণ জোগাড়ের চেষ্টা করা হবে বলেও জানা গিয়েছে।
এরই পাশাপাশি নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত হুগলির প্রোমোটার অয়ন শীলের সংস্থার নামে থাকা এবিএস ইনফোজোনের অফিসেও তল্লাশি চালান সিবিআই আধিকারিকরা। এর পাশাপাশি অয়নের মা-বাবার সঙ্গে কথা বলতে অয়নের চুঁচুড়ার পৈতৃক বাড়িতেও যায় সিবিআইয়ের একটি দল। কারণ, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অয়ন শীলের থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূ্র্ণ তথ্য পাওয়া যায়।
সম্প্রতি ইডির তরফেও রাজ্যের সব পুরসভা গুলির থেকে ২০১৪ সালের পর নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য তলব করা হয়। সিবিআইয়ের অভিযান নিয়ে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া দেন পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি জানান, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে অভিযানে নেমেছে সিবিআই। এখন কোনও প্রভাবশালীর নাম তদন্তে উঠে আসে কি না, সেটাই এখন দেখার।