মুখ্যমন্ত্রীর সফর শেষ হতেই গোরু পাচার কাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু সিবিআইয়ের

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বীরভূম সফর শেষ হতে না হতেই ফের গোরুপাচার মামলায় তৎপর সিবিআই আধিকারিকেরা। বীরভূমের অস্থায়ী সিবিআই ক্যাম্পে জেলবন্দি তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল ঘনিষ্ঠ বোলপুরের বাহিরি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শুভঙ্কর ঘোষ ওরফে ভজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা।  কারণ, সিবিআই সূত্রে খবর, অনুব্রত মণ্ডল যে কোটি কোটি টাকার লটারি জিতেছেন তাঁর নেপথ্যে রয়েছেন এই তৃণমূল নেতা ভজন-ই। সিবিআইয়ের তরফ থেকে তলব পাওয়া মাত্র বৃহস্পতিবার বাইকে করে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্প আসেন এই তৃণমূল নেতা। ভজন ছাড়াও বোলপুরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়কেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এদিন। এই তৃণমূল কাউন্সিলরের নামে অনুব্রত মণ্ডল গাড়ি কিনেছিলেন বলে সিবিআই সূত্রে খবর।  আর সেই কারণেই তাঁদের যাবতীয় নথি নিয়ে সিবিআই অফিসে আসার কথা বলা হয় সিবিআইয়ের তরফ থেকে। এদিকে সিবিআই সূত্রে খবর, বিশ্বজ্যোতির পাশাপাশি বিজয় রজক নামে আরও একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছে সিবিআই। তাঁর নামে বেশ কয়েকটি বেনামি অ্যাকাউন্টের হদিশও তদন্তকারীর পেয়েছেন বলে জানাননো হয়েছে সিবিআইয়ের তরফ থেকে। আর এই সব তথ্য হাতে পাওয়ার পরই গাড়ি কেনা ও ব্যাঙ্ক লেনদেনের পিছনে গোরুপাচারের টাকা রয়েছে কিনা, তা জানতে চাইছে সিবিআই।

এরই পাশাপাশি সিবিআই সূত্রে এমনটাও জানা যাচ্ছে, বীরভূমের জেলবন্দি জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অর্ক দত্ত নামে এক তৃণমূলকর্মীকে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন গোয়েন্দারা।তাঁর কাছ থেকে মিলেছে বেশ কিছু নথি। সঙ্গে তদন্তকারীদের হাতে এসে পৌঁছেছে বেশ কিছু ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্টও। আর এই ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট থেকে এটাও স্পষ্ট যে, অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশই বেনামে এই অ্যাকাউন্টগুলি খোলা হয়েছিল বলে দাবি সিবিআই-এর।

তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বীরভূম সফর শেষের পর গোরুপাচার মামলায় সিবিআইয়ের এই তৎপরতা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলে ধারনা বঙ্গ রাজনৈতিক মহলের। কারণ, বুধবার বীরভূমের প্রশাসনিক সভা থেকে নাম না করে অনুব্রত মণ্ডল ইস্যুতে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোাপধ্যায়কে। কারণ, তিনি বলেছিলেন, ‘আমার দলের দু-এক জন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এমনিতেই ভোটের সময় তাঁদের বাড়ির বাইরে বের হতে দিত না। তা সত্ত্বেও মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছেন। সে যতদিন ফিরে না আসবে ততদিন বীরভূ্মের সংগঠন আমি দেখব।’ উল্লেখ্য গোরুপাচার মামলায় সিউড়ির সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে অসংখ্য ভুয়ো অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই অ্যাকাউন্টগুলি কে চালাত, তাঁকেও মরিয়া হয়ে খুঁজছে সিবিআই।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five − three =