হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তির মামলায় সিবিআইয়ের স্ক্যানারে এলাহাবাদ হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি এসএন শুক্লা। এই ঘটনায় প্রাক্তন বিচারপতি এসএন শুক্লা শুধু একাই নন, তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধেও মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে সিবিআইয়ের তরফ থেকে।
কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার অভিযোগ, এলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি থাকাকালীন এসএন শুক্লা তাঁর স্ত্রী সুচিতা তিওয়ারির নামে সম্পত্তি কিনেছিলেন। সিবিআইয়ের তথ্য অনুসারে, তার আয়ের তুলনায় এই সম্পত্তির পরিমাণ ছিল কয়েকগুণ বেশি। আয় বহির্ভূত সম্পত্তির মূল্য ২.৫৪ কোটি টাকা বলে জানানো হয়েছে সিবিআইয়ের তরফ থেকে।
শুধু তাই নয়, এর আগে, ২০১৭ সালের মে মাসে বেনিয়মের অভিযোগে লখনউয়ের প্রসাদ ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে নতুন করে ছাত্র ভর্তি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। লখনউয়ের ওই মেডিক্যাল কলেজের পক্ষে সুবিধাজনক রায় দেওয়ার বিনিময়ে তৎকালীন এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি এসএন শুক্লা মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ ওঠে। এরপরই বিচারপতি শুক্লার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তৎকালীন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র একটি প্যানেল গড়ে তদন্তের নির্দেশও দেন। এই তদন্তে বিচারপতি শুক্লার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিতও হয়। এরপরই তাঁকে পদত্যাগ করতে বলা হয়। যদিও বিচারপতির পদ থেকে পদত্যাগ করতে রাজি হননি এসএন শুক্লা।
প্রসঙ্গত, হাই কোর্টের বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির সম্মতি নেওয়া একান্ত প্রয়োজন। সেই অনুসারে ২০১৯ সালের অগাস্ট মাসে সিবিআইকে বিচারপতি শুক্লার বিরুদ্ধে মামলায় সায় দেন তৎকালীন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। শুক্লা ছাড়াও সিবিআই চার্জশিটে নাম ছিল আইএম কুদ্দুসি নামে ঠত্তিশগড় হাইকোর্টের প্রাক্তন এক বিচারপতিরও। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতির বিরুদ্ধে দু’টি মামলা দায়ের করে সিবিআই।
এরপর ২০২০ সালে বিচারপতির পদ থেকে অবসরগ্রহণ করেন এসএন শুক্লা। প্রসঙ্গত, ফিডব্যাক ইউনিট স্নুপিং মামলায় দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের অনুমতি দেওয়া হয় সিবিআইকে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নতুন এই অনুমতিকে ঘিরে ইতিমধ্যে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতোর। এর আগেও দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দিল্লি সরকারের নতুন আবগারি নীতিতে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। এর পরেই এলাহাবাদ হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের মামলা যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই ধারনা রাজনীতিবিদদের।