প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের মতো ভুয়ো ওয়েবসাইট বানিয়েছিলেন কুন্তল, দাবি সিবিআই-এর

প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ওয়েবসাইটের মতো দেখতে হুবহু ওয়েবসাইট অর্থাৎ ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরি করেছিলেন কুন্তল ঘোষ। যে ওয়েবসাইটে নম্বর বাড়িয়ে দেখানো হতো। শুধু তাই নয় এই ভুয়ো ওয়েবসাইটকে কাজে লাগিয়ে কুন্তল চাকরিপ্রার্থীদের বোঝাতেন, এবার চাকরিতে নিয়োগ পেতে হলে দিতে হবে টাকা। চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্য কারও ধন্দ্ব থাকলেও এই ভুয়ো ওয়েবসাইট দেখে সেই সন্দেহ নির্মূল করার উপায়ও তৈরি করে রাখেন কুন্তল। এরপর আসতো নিয়োগের পালা। তখনই চাকরিপ্রার্থীদের সামনে ফেলা হত ‘রেট চার্ট’। বিভিন্ন ক্যাটেগরির নিয়োগের জন্য তৈরি করা হয়েছিল ওই রেট চার্ট। অর্থাৎ ওই রেট চার্ট অনুসারে টাকা দিলেই চাকরি পাকা। আর এই ভুয়ো ওয়েবসাইট একটা নয়, দু-দুটো রয়েছে এমনটাই দাবি সিবিআই-এর তদন্তকারীদের।
সিবিআই সূত্রে খবর, অযোগ্যদের প্রাপ্ত নম্বর বাড়িয়ে দেখানোর জন্য একটি নয়, দু’টি ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরি করেন কুন্তল ঘোষ। সূত্রের খবর, সেই ওয়েবসাইটের ডোমেন কার নামে, কে তৈরি করেছিলেন সেটি, জানতে চেয়ে গুগলের সঙ্গে ইতিমধ্যে যোগাযোগও করা হয়েছে সিবিআই-এর তরফ থেকে। ইমেল মারফত এই সংক্রান্ত সব তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে গুগলের কাছ থেকে। যেহেতু সার্চ ইঞ্জিন গুগলের মাধ্যমে এই ওয়েবসাইট দেখা যেত, এবার তদন্তে গুগলের সাহায্য নিতে চলেছে সিবিআই। ডোমেন কার নামে, কেনা নাকি তা ভাড়ায় নেওয়া বিস্তারিত জানতে চায় সিবিআই। এখানে বলে রাখা শ্রেয় এই ভুয়ো ওয়েবাসাইটের কথা আগে উল্লেখ করেছিলেন ইডি-র আধিকারিকেরাও।
পাশাপাশি সিবিআই-এর তরফ থেকে এও দাবি করা হচ্ছে যে, এই ওয়েবসাইট তৈরি করার মূল লক্ষ্য ছিল, যাঁদের কাছে থেকে নিয়োগের জন্য টাকা নিয়েছিলেন কুন্তল তাঁদের ভরসা পেতেই। যাঁরা টাকা দিয়েছিলেন, তাঁরা জানতে চাইতেন ‘পর্ষদের’ ওয়েবসাইটে তাঁদের নাম উঠল কি না বা নম্বর বাড়ল কি না। সেই সময় এই ওয়েবসাইটগুলি দেখানো হতো। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ওয়েবসাইটের মতো দেখতে হুবহু এই ওয়েবসাইট দেখে কারও বোঝাও সম্ভব নয় কোন ফাঁদে পা দিয়েছেন তাঁরা। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরাও জানান, এই ভুয়ো ওয়েবসাইট দেখে কারও সন্দেহের কোনও অবকাশই নেই। পাশাপাশি তদন্তকারীরা এও জানান, প্রথমে তাঁরা একটি ওয়েবসাইটের তথ্য হাতে পান। পরে আরও একটি ওয়েবসাইটের তথ্য হাতে আসে তদন্তকারীদের।
সিবিআই-এর পাশাপাশি নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ইডির হাতে কুন্তল ঘোষ গ্রেপ্তার হওয়ার পর একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে। ইডি-র তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সরাসরি টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে কুন্তল ঘোষের নামে। এই নিয়োগকাণ্ডে তাঁর ভূমিকা ছিল ‘মিডলম্যান’-এর মতোই এমনটাই ধারনা তদন্তাকারীদের। শুধু তাই নয়, তদন্তকারীরা প্রায় নিশ্চিত, কুন্তল চাকরি বিক্রির টাকা সাদা করতে এনজিও, সিনেমা প্রযোজনায়, কারণ এমন তথ্য রয়েছে তাঁদের হাতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − 2 =