কালিয়াগঞ্জের ঘটনয়া জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন শাসক দলকে বিদ্ধ করতেই সরব হলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। প্রসঙ্গত, কালিয়াগঞ্জে ছাত্রী মৃত্যুর ঘটনা খতিয়ে দেখতে রাজ্যে এসেছে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন। রাজ্যে এসেই পুলিশ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো। কালিয়াগঞ্জের ঘটনায় পুলিশের গাফিলতির অভিযোগও তোলেন তিনি। ক্ষোভ উগরে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশেও।
এরপরই এই জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা যায় তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে। এদিন তিনি জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সনকে বিদ্ধ করে জানান, ‘রাজ্যে গণতন্ত্র আছে বলেই কমিশনের প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারছেন।‘ এরই রেশ ধরে কুণাল ঘোষের দাবি, ‘পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র আছে বলেই কমিশনের প্রতিনিধিরা এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে ঘটনাস্থলে যেতে পারছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিলে এয়ারপোর্ট থেকে বেরতে পারতেন না। গণতন্দ্র আছে বলে বড় বড় কথা। বিজেপির কথায় কমিশন বাংলাকে অপমান করতে আসে।‘ সঙ্গে কটাক্ষ করে এও জানান, কেওড়াতলা ও নিমতলা শ্মশানে শাখা খুলতে পারে বলেও জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন।
এখানেই শেষ নয়, কমিশনকে কটাক্ষ করে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘আপনারা বারবার যাতায়াত না করে কেওড়াতলা আর নিমতলায় অর্থাৎ শ্মশানে বসে থাকুন। সারাদিনে বহু মৃতদেহ আসে। প্রত্যেকটা মৃতদেহ সম্পর্কে একটা করে বিবৃতি দিন। ডেলি প্যাসেঞ্জারি না করে কেওড়াতলা না নিমতলায় একটা শাখা খুলুন।’ একইসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র এ প্রশ্নও তোলেন, গুজরাত বা উত্তর প্রদেশে ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে কমিশন যায় না কেন তা নিয়ে। পাশাপাশি এ প্রশ্নও তোলেন, বিলকিসের পরিবারের কাছে যায়নি কেন তা নিয়েও। এরই রেশ ধরে তৃণমূল মুখপাত্র এদিন এও বলেন,‘কেন্দ্রের কমিশন, অপদার্থ, দলদাস, অযোগ্য। মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করতে রাজনৈতিক পর্যটক হিসেবে আসে।’
এদিকে রবিবারই কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটায় মৃত ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন কমিশনের প্রতিনিধিরা। সবদিক খতিয়ে দেখে তাঁরা কেন্দ্রকে রিপোর্ট দেবেন বলে জানান কানুনগো।
প্রসঙ্গত, কালিয়াগঞ্জে গত শুক্রবার উদ্ধার হয় এক ছাত্রীর বিবস্ত্র দেহ। সেই ঘটনায় ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ তুলে সরব হয় প্রতিবেশীরা। পরিবারের তরফে সিবিআই তদন্তের দাবিও জানানো হয়। অন্যদিকে, প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, ওই ছাত্রী আত্মঘাতী হয়েছে। পুলিশ সুপার মহম্মদ সানা আখতারও তেমনই জানান। কিন্তু জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন এই ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়াঙ্ক কানুনগো বলেন, ‘একটা বাচ্চাকে অপহরণ করে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। বাচ্চার মা আমাকে অভিযোগ করেছেন।’