পার্শ্ব শিক্ষকদের বেতন নিয়ে রাজ্যকে হলফনামা জমা দিতে বলল কলকাতা হাইকোর্ট। এ রাজ্যের পার্শ্ব শিক্ষকরা কেন কম বেতন পান, সেই নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার উভয়ের বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।আদালতের তরফ থেকে শুক্রবার প্রশ্ন তোলা হয়, অন্য রাজ্যে কেন্দ্রের একইরকম অনুদান নিয়ে যদি পার্শ্ব শিক্ষকদের বেতন বেশি হয়, তাহলে এই রাজ্যে নয় কেন তা নিয়েই। একইসঙ্গে আদালতে এ প্রশ্নও ওঠে, কী করে স্কুলে তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর থেকে একজন পার্শ্ব শিক্ষক কম বেতন পান? কোন জায়গায় বিষয়টি আটকে রয়েছে? পুরো বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জবাব জানতে চাওয়া হয় রাজ্যের কাছে। এই প্রশ্নে আদালত রাজ্যের ব্যাখ্যা তলব করল আদালত। এই প্রশ্নেই কেন্দ্র ও রাজ্যের বক্তব্য হলফনামা দিয়ে জানানোর নির্দেশ দেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর। বিষয়টি নিয়ে দুই তরফের কাছে জানতে চাওয়া হয়। ১৬ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, ‘সম কাজে সম বেতন’ দাবি করে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন চালিয়ে আসছেন রাজ্যের পার্শ্ব শিক্ষকরা। পার্শ্ব শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, পূর্ণ সময়ের শিক্ষকদের মতোই তাঁদের কাজ করতে হয়। সেখানে প্রাথমিক স্কুলগুলিতে পার্শ্ব শিক্ষকরা বেতন পান ১০ হাজার ৫০০ টাকা। অন্যদিকে, উচ্চ প্রাথমিক স্কুলগুলিতে পার্শ্ব শিক্ষকরা বেতন পান ১৩ হাজার টাকা। যেটা পূর্ণ সময়ের শিক্ষকদের বেতনের থেকে অনেকটাই কম। এরপরই সম বেতনের দাবি নিয়ে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থও হন। এর আগেও রাজ্যের কাছে বেতন বৃদ্ধি নিয়ে জবাব জানতে চাওয়া হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে অবশ্য রাজ্যের তরফ থেকে সমস্ত দোষ চাপিয়ে দেওয়া হয় কেন্দ্রের ঘাড়েই। রাজ্যের বক্তব্য ছিল, কেন্দ্রীয় সরকার অনুদান কমিয়ে দেওয়ার কারণে বেতন বৃদ্ধি সম্ভব হচ্ছে না।
উল্লেখ্য, ক্ষমতায় আসার আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পার্শ্ব শিক্ষক ও অস্থায়ী চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীদের ন্যায্য বেতনের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর অবশ্য কিছুটা বেতনবৃদ্ধি হলেও পরে আর বেতন বাড়ানো হয়নি। তাঁদের পূর্ণ শিক্ষক করার দাবিও পূরণ হয়নি বলে আন্দোলনে অংশ নিতেও দেখা গিয়েছিল শিক্ষকদের।