কলকাতা: খড়গপুর আইআইটি-তে ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাই কোর্ট। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে সেই রিপোর্ট জমা দিতে হবে। পাশাপাশি কেস ডায়রি পেশ করতে হবে খড়গপুর টাউন থানার ওসিকে।
তদন্ত ঠিক মতো চলছে কিনা, দেখার জন্য একজন উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক নিযুক্ত করবেন পুলিশ সুপার। আগামী বৃহস্পতিবার আদালতে উপস্থিত থাকতে হবে তদন্তকারী অফিসার এবং সুপার কতৃর্ক নিযুক্ত উচ্চ পদস্থ আধিকারিককে। অবিলম্বে ভিসেরা পরীক্ষার জন্য পাঠাতে হবে।
গত ১৪ অক্টোবর খড়গপুর আইআইটি-র হস্টেলের ঘর থেকে এক ছাত্রের দেহ উদ্ধার হয়েছিল। হস্টেলের ঘর থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ায় ছাত্ররা আইআইটি কর্তৃপক্ষকে জানান। উদ্ধার হয় অসমের বাসিন্দা ফাইজ়ান আহমেদের দেহ। তিনি বিটেক মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে তৃতীয় বর্ষে পাঠরত ছিলেন। মৃতের পরিবারের অভিযোগ ছিল, আত্মহত্যা নয়, তাঁকে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনায় সিআইডি কিংবা বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন মৃতের বাবা সেলিম আহমেদ। সেই আর্জি নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চে তাঁর মামলা দায়ের হয়। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি ছিল।
এদিন ছাত্র-মৃত্যুর মামলায় খড়গপুর আইআইটির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা। তিনি মন্তব্য করেন, সুপ্রিম কোর্টে র্যাগিং নিয়ে কড়া নির্দেশ আছে। মান্থার একক বেঞ্চ জানায়, এই ঘটনায়, পরিষ্কার র্যাগিং হয়েছে। আর ছাত্রদের নিজেদের মধ্যে শত্রুতার ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি করে।
এদিন হাইকোর্ট জানায়, অবিলম্বে ভিসেরা পরীক্ষার জন্য পাঠাতে হবে নমুনা। মৃত ছাত্রের সঙ্গে শেষ যে ব্যক্তির ফোনে কথা হয়েছিল তাঁকে খুঁজে বার করে জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রয়োজনীয় সকলের সাক্ষ্য ও গোপন জবানবন্দি নিতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন অনুযায়ী র্যাগিং আটকানোর সব পরিকাঠামো খড়গপুর আইআইটিতে আছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখবে পুলিশ। পাশাপাশি হোস্টেলে সিসিটিভি আছে কিনা দেখবে পুলিশ।
হাই কোর্ট এটাও স্পষ্ট করে আইআইটি কর্তৃপক্ষকে তদন্তের ব্যাপারে সম্পূর্ণ সহযোগিতাও করতে হবে।