ময়নার বিজেপি নেতার দ্বিতীয়বার ময়না তদন্তের নির্দেশ আদালতের

সরকারি হাসপাতালের ময়নতদন্তে ভরসা নেই এমনটাই দাবি জানিয়েছিলেন ময়নার মৃত বিজেপি নেতার পরিবারের সদস্যরা। পাশাপাশি এও দাবি করেছিলেন সিবিআই তদন্তের।এই ইস্যুতে মামলাও দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে।এরপর বুধবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে এই মামলার শুনানি হয়।
সওয়াল জবাব শেষে মৃত বিজেপি নেতার দেহ দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা।মৃত বিজেপি নেতার দেহ দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের পাশাপাশি রাজ্যকে দ্রুত মৃতদেহ কলকাতার কমান্ড হাসপাতালে নিয়ে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়।পাশাপাশি আদালত এও নির্দেশ দেয় যে, পরিবারকে মৃতদেহ দেওয়ার অনুমতি দিতে হবে।ময়নাতদন্ত প্রসঙ্গে বিচারপতি মান্থা জানান, কমান্ড হাসপাতাল টিম তৈরি করে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের ভিডিওগ্রাফি করবে। রাজ্য মনে করলে দু’জন এক্সপার্ট সেখানে পাঠাতে পারবে। দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ময়না থানা ও আদালতে জমা দিতে হবে।
বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এই নির্দেশের পর রাজ্য সরকারের তকরফ থেকেও কোনও আপত্তি জানানো হয়নি বলেই আদালত সূত্রে খবর। বরং রাজ্যের আইনজীবী আদালতকে জানিয়েছেন, মৃতের পরিবারকে নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যাপারেও তারা রাজি।
এর পাশাপাশি মৃতের পরিবার ও প্রতিবেশী অমিত তাঁতির বাড়ি চার সপ্তাহ কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এরই পাশাপাশি এদিন আদালত এও জানায়, বিজেপি নেতার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের হওয়া এফআইআরে নতুন কিছু ধারা যোগ করতে হবে। আগামী সোমবার রাজ্যকে তদন্তে অগ্রগতির রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশও দেয় আদালত। একইসঙ্গে বিকেলের পর কেন ময়নাতদন্ত, সেই নিয়ে রাজ্যের ব্যাখ্যা চেয়েছে আদালত।
প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে বিজেপি নেতাকে বাড়ি থেকে অপরহরণ করে খুন করা হয়েছে বলে আদালতকে জানিয়েছেন মৃতের পরিবারের আইনজীবী। পাশাপাশি মৃতের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, পুলিশকে জানালেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মৃতের স্ত্রী লক্ষ্মী ভুঁইয়া রাজ্যের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের করেছে।
এদিকে রাজ্যের আইনজীবী অমিত বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন আদালতকে জানিয়েছেন, যে ঘটনা ঘটেছে সেটা দুঃখজনক। কোনও দোষীকে বাঁচাতে তিনি আদালতে দাঁড়াননি। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে যা বলা হচ্ছে তার জবাব দিতেই তিনি আদালতে দাঁড়িয়েছেন বলেই জানান রাজ্যের আইনজীবী। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে। কারণ দেহ হাসপাতালে পাঠানোর পরে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে খুন ও অপরহরণের মামলা রুজু করেছে। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তমলুক মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্ত করা হয়। এরপর পরিবার দেহ নেয়নি। তিনি আরও জানিয়েছেন, রাজ্যের এখানো কোনও কিছু লুকনোর নেই। তিনি বলেন, কোর্ট চাইলে আমরা নিজেদের দায়িত্বে দেহ কমান্ড হাসপাতালে পৌঁছে দেব। তবে কোনও রাজনৈতিক দল দেহ হস্তগত করা চেষ্টা করতে পারে বলেই আমাদের আশঙ্কা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven − 3 =