‘তদন্ত প্রভাবিত করতে জেল সুপার ইচ্ছে করে আদালতের নির্দেশ না মেনে বিকাশকে হাসপাতালে পাঠান। ইচ্ছে করেই এই ধরনের কাজ করা হয়েছে।’ বৃহস্পতিবার বিকাশ মিশ্রের মামলায় প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারকে এমন ভাষাতেই তীব্র ভর্ৎসনা করেন কলকাতা হাইকোর্টেরবিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। এই প্রসঙ্গে বিচারপতির জয়মাল্য বাগচী আরও জানান, ‘কয়লা পাচার-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত বিকাশ মিশ্র বড় ব্যবসায়ী। ইচ্ছে করে তাঁকে হাসপাতালে পাঠিয়ে তদন্ত প্রভাবিত করতে চেয়েছেন সুপার।’ বারবার বিকাশকে হাসপাতালে পাঠানো আসলে জেল সুপারের সাহসী পদক্ষেপ বলেও মনে করেন তিনি। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে ছিল বিকাশ মিশ্রের মামলার শুনানি। সেখানে বিচারপতি বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ না মানায় আদালতে ডেকে পাঠানো হয় জেল সুপার দেবাশিস চক্রবর্তীকে। এদিন তিনি যে সব যুক্তি দেখান, তার কোনওটাতেই মান্যতা দেওয়া হয়নি। আদালত অবমাননার মামলায় দোষী সব্যস্ত করা হয়েছে সুপারকে। ১০ হাজার টাকা জরিমানাও ধার্য করা হয়।
একইসঙ্গে বিচারপতি এদিন স্পষ্ট বলেন, ‘জেল সুপারের এই আচরণ ইচ্ছাকৃত। একজন সরকারি কর্মচারী হওয়ার পরেও জুডিশিয়াল নির্দেশ অমান্য করেছেন। একজন বন্দিকে স্পেশাল ট্রিটমেন্ট দিয়েছেন, এটা জেনে যে তিনি বড় ব্যবসায়ী। বিচারপতির মতে, জেলের কাজ হল বন্দিদের সংশোধন করা। জেল সুপারের উচিত আইন মেনে চলা। যাতে বাকিরা তাঁকে অনুসরণ করতে পারে।’ তিনি সবার প্রতি সমভাবাপন্ন হবেন এমনটাও বলেন বিচারপতি। আর এই প্রেক্ষিতেই জেল সুপারের ক্ষমা গৃহীত হয়নি এদিন।
এদিকে বর্তমানে জামিনে রয়েছেন কয়লা-কাণ্ডে অভিযুক্ত বিকাশ মিশ্র। জেল হেফাজতে থাকাকালীন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু আদালতের নির্দেশ ছিল, প্রথাগত চিকিৎসার দরকার না পড়লে যেন জেলে ফিরিয়ে আনা হয় তাঁকে। কিন্তু সেই নির্দেশ মানা হয়নি বলেই অভিযোগ। হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে বলে দাবি করে আদালতের দ্বারস্থ হয় সিবিআই।