সোমবার ফেরে হাই কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে সিবিআই। এদিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা যায় বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুকে। নবম -দশমে নিয়োগ দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি সিবিআইয়ের কাছে জানতে চান, চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা নিয়ে। একইসঙ্গে এ প্রশ্নও তোলেন, যাঁরা ওএমআর শিট বিকৃত করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে তা নিয়েও। পাশাপাশি এদিনও তদন্ত নিয়ে বাবংবার ক্ষোভের সুরও শোনা গিয়েছে তাঁর গলায়। আদালত সূত্রে খবর, এদিন বিচারপতি বসু সিবিআই আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, ‘সিবিআই কী ভাবে তদন্ত করবে, তার উপদেশ কেন বার বার হাইকোর্টকে দিতে হচ্ছে? এই ধরনের ক্ষেত্রে তদন্তকারী সংস্থা বা কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া ভালো দেখায় না। গত ছ’বছরে তো অনেক টাকা পাচার হয়ে গিয়েছে।তাহলে সিবিআই এতো ঢিলেঢালা মনোভাব দেখাচ্ছে কেন?’ একইসঙ্গে বিচারপতি বসুর পর্যবেক্ষণ, ‘কিছু সুবিধাভোগীকে গ্রেপ্তার করা যাবে। চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। কিন্তু বাকি সুবিধাভোগীদের কেন ছেড়ে রেখেছেন?’ পাশপাশি তাঁর পরামর্শ, তদন্ত তাড়াতাড়ি শেষ করুন। তদন্ত শেষ না হলে মামলা ঝুলে থাকবে। সেক্ষেত্রে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে না। স্কুলে বহু পদ শূন্য থেকে যাবে।’
প্রসঙ্গত, এর আগেও হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়েছে সিবিআই। তবে এদিন তদন্তের গতি প্রকৃতি নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলে আদালত চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি এই মামলার শুনানি হয় কলকাতা হাইকোর্টে। সেদিনও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর উপর অসন্তোষ প্রকাশ করেন হাইকোর্টের দুই বিচারপতি। শুধু তাই নয়, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সিবিআই-এর স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট-এর তদন্তকারী অফিসারকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।ওই দিনেই সিবিআইয়ের দেওয়ার রিপোর্ট নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।বলেছিলেন, ‘সমাজ থেকে জঞ্জালদের সরিয়ে যোগ্যদের জায়গা করে দিন।’ শুধু সিবিআই-ই নয়, ৩১ জানুয়ারি, স্কুল সার্ভিস কমিশনকেও ভর্ৎসনা করেছিলেন তিনি।
এদিকে আবার এই নিয়োগ দুর্নীতিতে এসএসসি-র ডব্লুউবিসিএস পদমর্যাদার অফিসারের বিরুদ্ধে উঠেছে বিধিভঙ্গের অভিযোগ। বিষয়টি সরাসরি নবান্নের নজরে এনেছে বিকাশ ভবন। সম্প্রতি অবসর নেওয়া ওই অফিসার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন। বিকাশ ভবন সম্প্রতি কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার দপ্তরকে জানিয়েছে, প্রথম এসএলএসটি পরীক্ষার নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশের প্যানেলের মেয়াদের সময়সীমা বেআইনি ভাবে বাড়ানোর নেপথ্যে এই অফিসারের ভূমিকা ছিল। প্যানেলের সময়সীমা থাকে সাধারণত এক বছর। এই পরিস্থিতিতে ওই অফিসারের ভূমিকার কথা কর্মিবর্গ দপ্তরকে জানিয়ে পরবর্তী প্রশাসনিক ও বিভাগীয় পদক্ষেপের ব্যাপারে জানতে চেয়েছেন শিক্ষাকর্তারা।