এবার আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগে ডিএ আন্দোলন কারীদের আটজনের বিরুদ্ধে দায়ের হয় এফআইআর। তবে এই মামলায় আট আন্দোলনকারীর আগাম জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট। সরকারি কর্মী হওয়ার কারণে তাঁদের কোনও শর্ত দেওয়া হয়নি। তবে ওই আট সরকারি কর্মীকে তদন্তে সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। প্রসঙ্গত, গত বেশ কয়েক মাস ধরে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন সরকারি ক্রমীদের একাংশ। ইস্যু, দিতে হবে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ। শুধু সুর চড়ানোই নয়, আন্দোলনেও নামতে দেখা গেছে সরকারি কর্মীদের এই একাংশকে। এদিকে এই ডিএ আন্দোলন নিয়ে শুরু হয়েছে শাসক বিরোধী রাজনৈতিক তরজাও। এরপরই সামনে এল এমন ঘটনা।
প্রসঙ্গত, দেবপ্রসাদ হালদার নামে এক ব্যক্তি মুচিপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি জানিয়েছিলেন, ডিএ আন্দোলনকারীরা ২ কোটি টাকা লোপাট করেছে। এই ঘটনায় ডিএ আন্দোলনকারী ভাস্কর ঘোষ, নির্ঝর কুণ্ডু, রাজীব দত্ত, চন্দন চট্টোপাধ্যায়, সন্দীপ ঘোষ, ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল, শৈবাল সরকারের নামে টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ ওঠে। পাশাপাশি ডিএ আন্দোলনকারী ১৫ জনের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ তুলে রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি, কলকাতার পুলিশ কমিশনার, সিআইডির ডিআইজি সহ একাধিক প্রশাসনিক আধিকারিকের কাছে চিঠি পাঠান জনৈক দেবপ্রসাদ হালদার। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ ও কোষাধ্যক্ষ শৈবাল সরকারকে গ্রেপ্তারির দাবিও করা হয়। শুধু তাই নয়, এফআইরে তাদেরও নাম ছিল বলেই জানা যায়। তবে পরবর্তীকালে অডিট করে দেখা যায় সব মিলিয়ে মোট ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা উঠেছে এবং সবটাই হিসেবের মধ্যে রয়েছে। বৃহস্পতিবারের আদালতের এই রায়ে আগাম জামিন পাওয়া বড় জয় বলেই মনে করছেন ডিএ আন্দোলনকারীরা।
এদিন আদালতে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়ে ডিএ আন্দোলনকারীদের আইনজীবী জানান, দেবপ্রসাদ হালদার নামে ওই জনৈক ব্যক্তি আগেই আন্দোলন তুলে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসার জন্য ডিএ আন্দোলনকারীদের পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই পরামর্শ না মানায় আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করা হয় বলে আদালতে জানান ডিএ আন্দোলনকারীদের আইনজীবী। শুনানির পর আদালত এদিন তাঁদের জামিন মঞ্জুর করা হয়।
এদিকে এই গোটা ঘটনায় সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন ডিএ আন্দোলনকারীরা। সঙ্গে এও দাবি করেন, তাঁদের আন্দোলন ভাঙার জন্য সরকারের তরফে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তবে কোনওভাবেই তাদের আন্দোলন ভাঙা যাবে না বলে দাবি করে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। এদিকে সম্প্রতি নবান্ন থেকে ডিএ আন্দোলনকারীদের কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আন্দোলনের জন্য সিপিএম ও বিজেপিকে দায়ী করেন তিনি।