রবিবার দুর্গাপুরে একই পরিবারের চার জনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তে নেমে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি ও চাকরি বিক্রি চক্রের যোগসূত্র থাকার অভিযোগ সামনে আসে। আর তারই ভিত্তিতে এবার এই অভিযোগের জল গড়াল কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত। ওই ঘটনায় হলফনামা দিয়ে আইনজীবীকে মামলার অনুমতি দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। প্রসঙ্গত, রবিবার কাকভোরে দুর্গাপুরে একই পরিবারের চারজনের মৃত্যুর ঘটনা জনসমক্ষে আসে। দুর্গাপুরের কুড়ুলিয়াডাঙার মিলনপল্লির বাসিন্দা অমিত মণ্ডলের ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। একইসঙ্গে ওই ঘরে মৃত অবস্থায় মেলে তাঁর স্ত্রী, ১০ বছরের এক ছেলে ও এক বছরের মেয়ের দেহও। এরপর তদন্তে নেমে এই রহস্য মৃত্যুতেও জড়িয়ে যায় নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনা। কারণ, মৃত্যুর আগে অমিত মণ্ডল তার মোবাইল থেকে আত্মীয়দের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে দুটি সুইসাইড নোট পাঠান। সেখানে স্কুলে নিয়োগে তাদেরই কিছু আত্মীয়ের জড়িত থাকা, তার সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় দিনের পর দিন মানসিক হেনস্থার অভিযোগ করা হয়। আর এই ঘটনা তদন্তকারীদের নজরে আনেন অমিতের মাসতুতো বোন। আর সেখানেই ঘটনায় আসে এক চাঞ্চল্যকর মোড়।
মৃতের মাসতুতো বোনের দাবি, অমিত মণ্ডলের মৃত্যু ঘটনায় দায়ী তাঁর মৃত অমিত ওরফে বুবাই মন্ডলের মা বুলারানী মণ্ডল ও মামাতো ভাই সুশান্ত নায়েক ওরফে নান্টু। দাদা অমিত মণ্ডলের মৃত্যু স্বাভাবিক নয় অভিযোগ তুলে বোন সুদীপ্তা ঘোষ জানান, মৃত অমিত জানতে পেরেছিলেন তাঁর মামার বাড়ির পরিবারের বেশ কিছু সদস্য ২০১২ সালে টেট পাশ না করেও টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন। বোনের দাবি, এই সব কথাই হোয়াটস অ্যাপে জানিয়েছিলেন অমিত মণ্ডল। তার পরেই আসে তাদের গোটা পরিবারের মৃত্যুর খবর।
নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসতেই সোমবার দুর্গাপুরের এই ঘটনা তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার আবেদন নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন আইনজীবী শামিম আহমেদ । বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এই আবেদন শুনে আইনজীবীকে হলফনামা দিয়ে গোটা ঘটনা জানিয়ে মামলার অনুমতি দেন। পাশাপাশি আদালত এও জানায় যে এই মামলা শোনা হবে।