মৃত আব্দুর রহমানের সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার যোগ রয়েছে। মুর্শিদাবাদের লালগোলায় চাকরিপ্রার্থী আব্দুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণের কথা জানাল কলকাতা হাই কোর্ট। টাকা দিয়েও প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি না হওয়ার কারণে আত্মঘাতী হয়েছিলেন ওই তরুণ, পরিবারের তরফে এমন অভিযোগ করা হয়েছিল। আব্দুরের লেখা ন’পাতার সুইসাইড নোটে দিবাকর কনুই নামে এক ব্যক্তিকে দায়ী করা হয়। এরপরই তদন্তে নেমে তারাপীঠের হোটেল থেকে দিবাকর কনুই নামে অভিযুক্ত গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদিন আদালতে শুনানি চলার সময় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সিবিআই কেন গ্রেপ্তার হওয়া দিবাকর কনুইকে জেলে গিয়ে জেরা করছে না, সেই প্রশ্নও তোলে আদালত। এরই রেশ ধরে নিজের পর্যবেক্ষণে এদিন বিচারপতি মান্থা জানান, এই মামলায় বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের কখা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ, আব্দুর রহমানের মৃত্যুর পর উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোট থেকে এটা বোঝা যাচ্ছে দিবাকর কনুই তাঁকে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলেও উল্লেখ রয়েছে ওই সুইসাইড নোটে। আরএ খানেই আদালত মনে করছে আব্দুরের আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনার সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার সরাসরি যোগ থাকলেও থাকতে পারে।প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলার বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের তদন্ত করছে সিবিআই।
এরই পাশাপাশি বিচারপতি মান্থা এদিন তরুণের আত্মঘাতী হওয়ার মামলায় পুলিশি তদন্তের উপর আস্থা প্রকাশ করেন। বিচারপতি মান্থা এও জানান, মৃত তরুণের পরিবারের করা অভিযোগের ভিত্তি এখনও অবধি লালগোলা থানার পুলিশ যথাযথভাবেই তদন্ত করেছে। তবে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তভার যেহেতু সিবিআইয়ের হাতে রয়েছে, সেই কারণে ধৃত দিবাকরকে জেলে গিয়ে জেরা করা উচিত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার।
এদিকে কলকাতা হাইকোর্ট এদিন জানায়, লালগোলার তরুণ আব্দুর রহমানেল বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় সিবিআইয়ের বক্তব্যও শুনতে চায় আদালত। মৃত্যুর পাশাপাশি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত নিয়েও চিন্তিত আদালত। সেই কারণে সিবিআইয়ের মতামতও জানতে চাওয়া হয়। বুধবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। সেদিনই সিবিআইয়ের বক্তব্য শোনা হবে, তারপরই এই মামলা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে আদালত। উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদের লালগোলার ওই তরুণকে প্রাথমিকে চাকরির টোপ দিয়ে ৬ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছিল। চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত চায় ওই তরুণ। টাকা ফেরত চাইতেই তাঁকে হুমকির মুখে পড়তে হয়। মানসিক চাপের কারণে আত্মঘাতী হয় পরিবার, এমনটাই অভিযোগ।