সিমলাপালে শুভেন্দুর সভার অনুমতি বিচারপতি মান্থার

বাঁকুড়ার সিমলাপালে বিজেপির সভায় আপত্তি নেই আদালতের। ফলে আগামী ১৭ মে শুভেন্দু অধিকারীর সভার জন্য অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এও নির্দেশ দেন, দুপুর ৩টে থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সভা করতে হবে। যদিও এই নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল পুলিশ।
উল্লেখ্য, বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করার জন্যেই সরকারের নির্দেশে পুলিশ বাঁকুড়ায় সভা করার জন্য অনুমতি দেয়নি, এমনটাই অভিযোগ তুলেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু আধিকারী। এই ইস্যতেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থও হয় বিজেপি। এদিকে তৃণমূলের তরফ থেকে দাবি করা হতে থাকে বিজেপি গোটা বিষয়টি নিয়ে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে।
তবে পুলিশ এই সবার অনুমতি না দেওয়ায় এই সভা নিয়ে প্রায় হাল ছেড়েছিলেন বাঁকুড়া জেলা বিজেপি সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডল। তিনি জানান, পুলিশি অনুমতি না মেলায় সিমলাপালে শুভেন্দু অধিকারীর পূর্ব নির্ধারিত সভা ‘বাতিল’ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে সিমলাপাল রাজবাড়ি মাঠে সভা করার কথা ছিল বিধানসভার বিরোধী দলনেতার। সেই মতো যাবতীয় প্রচার ও প্রস্তুতি সেরে ফেলেছিল গেরুয়া শিবির। সমস্ত নিয়ম মেনে পুলিশ প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হলেও পুলিশ অনুমতি দিতে টালবাহানা করছিল বলে অভিযোগ ওঠে।
এদিকে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো এদিন বলেন, ‘পুলিশের এখন প্রধান কাজ বিজেপিকে আটকানো। বিজেপির কর্মসূচি দেখে এ রাজ্যের শাসক দল আতঙ্কিত।’ সঙ্গে তিনি এও জানান, আগামী দিনে এর প্রভাব পঞ্চায়েত নির্বাচনে পড়বে। তবে পরিস্থিতি বদলায়
হাইকোর্টের অনুমতি মেলায়। এবার সিমলাপালের সভাস্থলেই শুভেন্দু অধিকারীর জনসভা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে রাজ্য বিজেপির তরফে, এমনটাই সূত্রে খবর।
এদিকে হাইকোর্টের এই নির্দেশের পর বিরোধী দলনেতার সভা বাতিল করা ইসুতে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে পুলিশকে তোপ দাগতে ছাড়েননি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আগামী ২১ মে দার্জিলিংয়ে সভা বাতিল করার চেষ্টার অভিযোগ নিয়েও সোশ্যাল মিডিয়ায় শুক্রবার বিকেলে সরব হতে দেখা যায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় দীর্ঘ পোস্টে শুভেন্দু অধিকারী লেখেন, ’মমতা পুলিশের এখন একমাত্র কাজ হল বিরোধী দলনেতাকে বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা সমাবেশে বাধা দান করা। লেডি কিমের নির্দেশেই আমাকে বাঁকুড়ার সিমলাপালে ও পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরে সভা করতে বাধা দেওয়া হয়।’
এর পাশাপাশি তাঁর সংযোজন, ‘মমতার পুলিশ মনে করছে আমাকে বাধা দিয়ে বোধহয় রানিমার কাছে নিজেদের নম্বর বেড়ে গেল। তাই এবার অতি উৎসাহিত হয়ে আগামী ২১শে মে আমার দার্জিলিং এর নির্ধারিত জনসভাও বন্ধ করার জন্য অভিনব ফন্দি এঁটেছে।’
অন্যদিকে, গোটা বিষয়টিকে বিজেপি অযথা রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত করছে বলে অভিযোগ রাজ্য শাসকদলের। সিমলাপাল ব্লক তৃণমূল সভাপতি ফাল্গুনী সিংহ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ওই সভায় লোক হবে না বুঝতে পেরেই তড়িঘড়ি বিজেপি সভা বাতিল করেছে। শুভেন্দু অধিকারী এলেই বুঝতে পারতেন সিমলাপাল এলাকায় তাঁর দলের জনভিত্তি অনেক বেশি। পুলিশি অনুমতি না দেওয়ার বিষয়টি বলে বিজেপি মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × five =