কলকতা: এ যেন কোনও থ্রিলার সিনেমার দৃশ্য। কলকাতার বুক থেকে ব্যবসায়ীকে অপহরণ। তদন্তে নেমে একের পর এক সূত্র ধরে এগোনো। তারপর ফাঁদে ফেলে অপহরাণকারীদের গ্রেপ্তার। তবে, এখানে মারকাটারি কোনও অ্যাকশন দৃশ্য ছিল না এই যা। এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকল কলকাতা।
ভরদুপুরে খাস কলকাতার রাস্তা থেকে অপহরণ করা হয় এক ব্যবসায়ীকে।অপহরণের অভিযোগ পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ব্যবসায়ীকে খুঁজে বের করল কসবা থানার পুলিশ। ধরা পড়ল অপহরণকারীদের গোটা দল। বুধবার কসবা থানা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
অপহৃত ব্যবসায়ীর নাম শেখ কুতুবুদ্দিন গাজি। তাঁর বয়স ৩৭। পেশায় ইট ব্যবসায়ী কুতুবুদ্দিনকে কসবার শান্তিপল্লির চক্রবর্তী পাড়ায় তাঁর অফিসের খুব কাছ থেকে দুষ্কৃতীরা অপহরণ করে বলে অভিযোগ। যদিও পুলিশের কাছে তাঁর অপহরণের রিপোর্ট দায়ের করা হয় রাত ৮টা নাগাদ।জানা গিয়েছে, পুলিশের নাম করে মুক্তিপণ বাবদ চাওয়া হয়েছিল ৪০ লক্ষ টাকা। সেই টাকা দেওয়ার নাম করেই ফাঁদ পেতে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। টালিগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার হয়েছে ৫ জন। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে অপহরণের জন্য ব্যবহৃত গাড়ি দু’টিকেও।
কসবা থানার পুলিশ জানিয়েছে, কুতুবুদ্দিনের বন্ধু ও ব্যবসার অংশীদার রেহান আহমেদ কুরেশি অপহরণের অভিযোগ জানাতে আসেন বুধবার রাত ৮টা নাগাদ। যদিও ঘটনাটি ওই দিন দুপুর ১২টা থেকে ১টার মধ্যে ঘটেছে বলে জানান তিনি। পরে পুলিশের নাম করে ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে ফোন করে মোটা টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয় বলে দাবি করেন রেহান। এর পরই পুলিশকে বিষয়টি জানানোর সিদ্ধান্ত নেয় ওই ব্যবসায়ীর পরিবার।
এরপরই তদন্তে নামে গুন্ডা দমন শাখা। পুলিশ কমিশনার (CP) বিনীত গোয়েল নিজে অপারেশনের ব্লুপ্রিন্ট ছকে দেন। যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) মুরলীধর শর্মা ঘটনাস্থলে গিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেন। অন্তত ৫০ টি ফুটেজ দেখা হয়। দুষ্কৃতীদের চালচলন সম্পর্কে ধারণা তৈরি করে অপারেশনে নামেন তদন্তকারীরা। দেখা যায়, তারা টালিগঞ্জের দিকে গিয়েছে। এরপর পরিচয় গোপন রেখে মুক্তিপণের ৪০ লক্ষ টাকা নিয়ে অপহরণকারীদের সঙ্গে দর কষাকষি শুরু করে পুলিশ। একটি নির্দিষ্ট জায়গার কথা উল্লেখ করে সেখানে টাকা নেওয়ার জন্য ডেকে পাঠানো হয়। সেই ফাঁদে পা দিয়েই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে অপহরণকারীরা। এখনও পর্যন্ত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে খবর।