ঋষভ পন্থ , ভাঙা পায়ে খেলতে নামা এই উইকেটকিপার-ব্যাটারের দুর্দান্ত ইনিংসই ম্যাঞ্চেস্টার টেস্টের প্রথম দিনের মূল আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। ভারতের ৩৫৮ রানের ইনিংস অনেকটাই ভরসা পেয়েছে পন্থের সাহসী ব্যাটিংয়ে। অথচ দিনের শেষে স্কোরবোর্ডের এর চেহারাটা বলছে, অ্যাডভান্টেজ আপাতত ইংল্যান্ডেরই।
দিনের শুরুটা ভারতের জন্য অতটা খারাপ ছিল না। যদিও জাদেজা দ্রুত ফিরে যান, তারপরও শার্দূল ঠাকুর ও ওয়াশিংটন সুন্দর কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তবে থিতু হয়ে ৪১ করে আউট হন শার্দূল। এরপরই যেন সিনেমার দৃশ্য! চোটে কাহিল পন্থ মাঠে নামলেন আবার ব্যাট করতে। গ্যালারি তখন করতালিতে মুখর। পন্থ নামলেন, মাঠকে প্রণাম করে, পা টেনে টেনে গেলেন ক্রিজে। ব্যথা থাকা সত্ত্বেও বল খেলা বন্ধ করেননি। বরং আগ্রাসী হয়ে ওঠেন। ছক্কা হাঁকান আর্চারের বলে। স্পর্শ করেন টেস্টে ভারতীয়দের মধ্যে সর্বাধিক ছক্কার রেকর্ড। বিরাট স্ট্রোকে পূরণ করেন অর্ধশতরান। কিন্তু এরপরেই আউট। ততক্ষণে দলের রান তিনশোর গণ্ডি পেরিয়েছে।
সুন্দরও ২৭ রানে ফেরেন, কম্বোজ কোনও রান না করেই ফিরে যান। শেষ ব্যাটার হিসেবে পন্থ ৫৪ রানে আউট হলেও, তাঁর আত্মত্যাগেই ভারত পৌঁছয় ৩৫৮-তে। যদিও এই রান প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যথেষ্ট নয় বলেই মনে হচ্ছিল অনেকের। এবং সেই শঙ্কাই সত্যি করে দেন ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার , বেন ডাকেট ও জ্যাক ক্রলি। শুরু থেকেই আগ্রাসী মনোভাবে খেলেন তাঁরা। বিশেষ করে কম্বোজকে কার্যত নিশানা বানান ডাকেট। চা-বিরতির আগেই ইংল্যান্ড পৌঁছয় ৭৭ রানে। শেষপর্যন্ত ক্রলি ৮৪ রানে ফিরলেও, ডাকেট ৯৪ করে আউট হন সেই কম্বোজের বলেই, যাঁকে তাঁর লক্ষ্য করেই খেলছিলেন মনে হচ্ছিল। দু’জনের মধ্যে ১৬৬ রানের বিশাল জুটি। দিনের শেষে ভারত আশা করেছিল, অন্তত আরও দুই উইকেট নিয়ে খেলায় ফিরবে। কিন্তু রুট ও পোপ মিলে সে সুযোগও দিলেন না। বরং খেলা শেষ হওয়ার ঠিক আগে বুমরাহকে বাউন্ডারি মেরে দিন শেষ করেন পোপ। তবে বড় প্রশ্ন থেকেই যায়;ওয়াশিংটন সুন্দরকে এক ওভারও বল না করানোর সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল কি না?
ইংল্যান্ড এখনও ভারতের থেকে ১৩৩ রান পিছিয়ে, হাতে ৮ উইকেট। এই অবস্থায় তৃতীয় দিনের প্রথম এক ঘণ্টা হয়ে উঠতে চলেছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পন্থের লড়াই নিঃসন্দেহে কুর্নিশযোগ্য, তবে একার রূপকথা দিয়ে দলীয় ব্যর্থতা চাপা যায় না। ইংল্যান্ড এখন অনেকটাই চালকের আসনে।

