জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার মামলায় অস্বস্তিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ, বম্বে হাইকোর্টে বুধবার বিচারপতি অমিত বোরকারের সিঙ্গল বেঞ্চ মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন খারিজ করে দেয়। পাশাপাশি বিচারপতি এও বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে কোনও ভুল নেই, বেআইনি বিষয়ও নেই। তাই এই আবেদন গৃহীত হবে না।’ বুধবার বম্বে হাইকোর্টের একক বেঞ্চের একইসঙ্গে বিচারপতি অমিত বোরকার এও জানান, ‘বিশেষ আদালত এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়নি এবং তা নিম্ন আদালতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এই পদক্ষেপ সুপ্রিম কোর্টের আদেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য পূর্ণ।’ এর পাশাপাশি বর্তমানে এই মামলায় কোনও পদ্ধতিগত ত্রুটি বা এক্তিয়ারগত সমস্যা নেই বলে জানিয়ে দিয়েছে বম্ব হাইকোর্ট। এরপরই ফৌজদারি আবেদন খারিজ করে দেন বিচারপতি।
প্রসঙ্গত, ২০২১-র ১ ডিসেম্বরে মুম্বই সফরকালে মুম্বইয়ের কাফে প্যারেড গ্রাউন্ডের এক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় জাতীয় সংগীতের অবমাননা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এই ইস্যুতে ১৯৭১-র জাতীয় সম্মানের অবমাননা প্রতিরোধ আইনে মামলা করেন বিজেপি নেতা বিবেকানন্দ গুপ্ত। বিজেপি নেতা বিবেকানন্দ গুপ্তার অভিযোগ ছিল, জাতীয় সঙ্গীতের প্রথম গাওয়ার সময়ে মঞ্চে বসেছিলেন মমতা। পরে উঠে দাঁড়ান তিনি। এরপর হঠাৎই মঞ্চ ছেড়ে চলে যান বলেও অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই নিম্ন আদালতে মামলা হয়। এরপরই মুম্বইয়ের ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট এই মামলায় প্রথমে সমন পাঠায় মুখ্যমন্ত্রীকে। পরে মুম্বইয়ের এক বিশেষ আদালত সেই সমন খারিজ করে দেয়। এদিকে বিশেষ আদালতে রিভিউ পিটিশন দায়ের করেছিলেন মমতা। আদালতে তাঁর আইনজীবী জানিয়েছিলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির অধীনে কোনও সরকারি পদাধিকারীর বিরুদ্ধে সমন জারি করতে গেলে অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক। এই ক্ষেত্রে সেই অনুমোদন নেওয়া হয়নি। পাশাপাশি, সমনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য নিম্ন আদালতেই ফেরত পাঠান বিচারকরাও। পর্যবেক্ষণে বিশেষ আদালত বলেছিল, সমন জারির ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকভাবে যে নিয়মগুলি মানতে হয়, তা মানা হয়নি। তবে নতুন করে সমন জারির ক্ষেত্রে কোনও বাধ্যবাধকতা নেই বলেও জানিয়েছিল বিশেষ আদালত। এরপরই সমন খারিজ হয়ে যায়। পরে সেই মামলা খারিজ করে দেওয়ার আবেদন জানানো হয় বম্বে হাইকোর্টে। তবে বুধবার বম্বে হাইকোর্টে এই আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় জিইয়ে রইল অস্বস্তি।