শনিবার সকালে পঞ্চান্নগ্রাম অটো স্ট্যান্ড থেকে উদ্ধার হল রক্তাক্ত দেহ। অভিযোগ, রিক্সায় করে এনে দেহ ফেলে দেওয়া হয় এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, নিহত ওই যুবকের নাম মিতেন্দ্র পাসওয়ান। বয়স ৩৭-এর মিতেন্দ্রর শরীরে মিলেছে একাধিক আঘাতের চিহ্নও। শনিবারের এই ঘটনার খবর পেতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড বিভাগ।দ্রুত ঘটনার তদন্তে নামে তিলজলা থানার পুলিশ। এদিকে মিতেন্দ্রর শ্যালিকা বাবলিদেবী জানান, তপসিয়ায় জুতোর কারখানায় কাজ করতেন মিতেন্দ্র। প্রতিদিনের মতো শনিবারও সকাল ৭টায় কাজে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে যান তিনি। এরপরই সকাল ৯টা নাগাদ এমন ঘটনার কথা জানতে পারেন। স্থানীয় এক বাসিন্দাই এসে খবর দেয় এলাকায় দেহ পড়ে আছে মিতেন্দ্রের। বাবলিদেবী দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখতে পান, তখনও দেহে প্রাণ রয়েছে। ছটফট করছেন রাস্তায় পড়ে। তাড়াহুড়ো করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য সকলে তৈরি হচ্ছিলেন। সে সময় একটু জল খেলো। তারপর আর কিছু বলতে পারেননি মিতেন্দ্র।
এদিকে পরিবারের দাবি, কেউ মেরে ফেলে দিয়ে গিয়েছে দেহ। তবে কারও সঙ্গে ঝামেলার কথাও মিতেন্দ্র কখনও বাড়িতে জানাননি।তাই মিতেন্দ্রর পরিবারের সদস্যরাও বুঝে উঠতে পারছেন না কী কারণে এমন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। এদিকে মিতেন্দ্রর স্ত্রী লাভলি রয়েছেন। রয়েছে তাঁদের ছোট দু’টি বাচ্চাও। তাঁদের পাশেই থাকেন মিতেন্দ্র শ্যালিকাও। তদন্তে নেমে তিলজলা পুলিশের আধিকারিকদের প্রাথমিক ধারনা, মিতেন্দ্রকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে। কারণ, নিহতের শরীরে একাধিক জায়াগায় রয়েছে ক্ষতচিহ্ন। পুলিশের তরফে এও জানানো হয় যে, মিতেন্দ্রর দেহ যেখান থেকে উদ্ধার হয়, সেই পঞ্চান্নগ্রাম একেবারেই বাইপাস লাগোয়া এলাকায়। এই ঘটনায় স্থানীয় এক বাসিন্দা এই ঘটনা প্রসঙ্গে জানান, ‘বাঁ হাতে ছুরি দিয়ে কোপানোর চিহ্ন, পিঠেও কালো দাগ ছিল। পায়েও ছিল ক্ষতচিহ্ন।রক্তক্ষরণ হলেও তখনও বেঁচে ছিল বলেই শুনছি। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলেও বাঁচানো যায়নি।’ মিতেন্দ্র সম্পর্কে তাঁরা জানান, ‘আমরা কাজে যাই। তবে কারও সঙ্গে কোনওদিন ঝামেলার কথা শুনিনি।’
এদিকে তিলজলা পুলিশের সঙ্গে তদন্ত শুরু করছে লালবাজারের হোমিসাইড শাখাও। খুন করে ফেলে রেখে যাওয়ার তত্ত্বই জোরাল হচ্ছে। তবে অপেক্ষা করা হচ্ছে ময়না তদন্তের রিপোর্টের জন্য। কাণ, এই ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে তবেই মিতেন্দ্রর মৃত্যুর আসল কারণ সামনে আসবে বলেই পুলিশের দাবি।এদিকে মিতেন্দ্র যে কারখানায় কাজ করতেন, এই ঘটনায় সেখানকার কর্মীদের সঙ্গেও কথা বলেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে পরিবারের সদস্যদেরও। এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, যে পোশাক পরে এদিন বাড়ি থেকে মিতেন্দ্র বের হন, সেই পোশাকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়নি। তাহলে কি কারখানায় পোশাক বদলালেন নাকি এর পিছনে অন্য কোনও বিষয় রয়েছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর।