কম্বল বিতরণ বিপর্যয়: সস্ত্রীক জিতেন্দ্রর বিরুদ্ধে মামলা, ধৃত ৫

আসানসোলে কম্বল বিতরণে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫, সস্ত্রীক জিতেন্দ্রর নামে অনিচ্ছাকৃত খুন-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু। পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের উত্তর থানার রামকৃষ্ণ ডাঙ্গাল এলাকায় গত বুধবার শিবচর্চা অনুষ্ঠানে কম্বল বিতরণের আয়োজন করা হয়েছিল। কম্বল নিতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়, আহত হন বেশ কয়েকজন। ডিসি ওয়েস্ট অভিষেক মোদির তত্ত্বাবধানে তদন্তে নেমে এই ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ। জিতেন্দ্র তিওয়ারি ও তাঁর স্ত্রী চৈতালি তিওয়ারির নামে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। গেরুয়া শিবিরের আরও বেশ কয়েকজনের নামও অভিযোগপত্রে রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তবে অভিযোগপত্রে শুভেন্দু অধিকারীর নাম নেই। পুরো বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই তোলপাড় শুরু হয়েছে আসানসোলে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় মৃত ঝালি বাউরির ছেলে সুখেন বাউরি আসানসোল উত্তর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর মামলায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র ও বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি ও তাঁর স্ত্রী চৈতালি তিওয়ারির নাম রয়েছে। বিজেপির বেশ কয়েকজন কর্মী ও কাউন্সিলরের নাম আছে বলেও জানা গিয়েছে। এই ঘটনার পরই বেশ কয়েকজনকে আটক করে জেরা করার পরে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম রামবাবু সিং, বিনয় তিওয়ারি, মোহন মাহাতো, রাজকুমার পণ্ডিত ও জওহর ঠাকুর। শুক্রবার ধৃত পাঁচজনকে আসানসোল জেলা আদালতে পেশ করা হয়।
এই খবর জানতে পেরে বিজেপি কর্মীদের জামিনের বিষয়টি নিয়ে তদারকি করতে ও আইনি পরামর্শ নিতে আসানসোল আদালতে আসেন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি। আদালতে পৌঁছে সংবাদমাধ্যমের সামনে এই মামলা করা নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তিনি বলেন, গরিব মানুষদের কম্বল বিতরণ করতে গিয়ে কয়েকজনের প্রাণ যাওয়াটা খুবই দুঃখজনক। কিন্তু তার জন্য যদি এই ধরনের মামলা করা হয়, তাহলে হয়তো ঠিকই করছে। তাঁর দাবি, মানুষের মৃত্যুকে নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। দুর্ঘটনা আর অনিচ্ছাকৃত খুন, দুটো কি এক, এদিন এমন প্রশ্নও তোলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি।
তিনি বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের কথায় পুলিশ এই মামলা করেছে। আমরা কি কাজ করতে গিয়েছিলাম তা ওই এলাকার বাসিন্দারা জানেন। আমার স্ত্রী তো ওই অনুষ্ঠানের জন্য আসানসোল উত্তর থানার পুলিশকে গত ৩ ডিসেম্বর লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন। তখন পুলিশ কেন বলেনি, অনুষ্ঠান করা যাবে না। তিনি আরও বলেন, এর মোকাবিলা আইনের পথেই করা হবে। রাজনৈতিক ভাবে আমার ও বিজেপির সঙ্গে পেরে উঠতে না পারায় এইসব করছে। বেছে বেছে বিজেপির নেতা ও কর্মীদের বাড়ি থেকে তোলা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × 1 =