নতুন বছরে নতুন ঠিকানা পেতে চলেছে বঙ্গ বিজেপির কার্যালয়। আর এই নতুন ঠিকানা থেকেই শুরু হবে ভবিষ্যেতর কর্মপন্থা নির্ধারনের কাজ। অন্ত এমনটাই খবর রাজ্য বিজেপি সূত্রে। কারণ, সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর তার রেশ কাটতে না কাটতে এসে যাবে রাজনৈতিক যুদ্ধের মেগা ফাইনাল ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন। আর এই দুই যুদ্ধে বঙ্গের মাটিক শক্ত ভাবে পা রাখতে এমনই এক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। আপাতত সূত্রের খবর অনুসারে জানুয়ারি মাসেই মধ্য কলকাতা থেকে একেবারে সেক্টর ফাইভে চলে আসবেন বিজেপির এই অফিস। সেক্টর ফাইভে স্বাস্থ্য ভবনের কাছে এই নতুন অফিস ভাড়া নেওযা হচ্ছে বঙ্গ বিজেপির তরফ থেকে। বঙ্গ বিজেপি সূত্রে খবর, গিয়েছে ১৫ জানুয়ারির পরই স্বাস্থ্য ভবনের পাশে ভাড়া নেওয়া জায়গায় বিজেপির কার্যালয় স্থানান্তরিত হতে পারে। ফলে মুরলী ধর সেন লেনের এই অফিসে পড়ে থাকবে বহু স্মৃতি বিজড়িত ঘটনা।
এখানে বলে রাখা শ্রেয়, গত কয়েক বছর ধরেই বিজেপির কেন্দ্রীয় দল রাজ্যে একটি স্থায়ী ঠিকানা করার পরিকল্পনা করছিল। শুধু তাই নয়, কলকাতার পাশাপাশি বিভিন্ন জেলাতেও স্থায়ী পার্টি অফিস তৈরিরও পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেই মতো কিছু জায়গায় ইতিমধ্যেই তা হয়েছে। কিন্তু স্থায়ী ঠিকানা পেতে কিছুটা দেরি হবে বলেই আপাতত সল্ট লেকে অস্থায়ী ঠিকানায় নিয়ে আসা হচ্ছে কার্যালয়। কারণ, যাতায়াতের দিক থেকে ৬ নম্বর মুরলীধর সেনের কার্যালয়ে সুবিধা হলেও আয়তনে এই অফিস ছোটো হয়ে গিয়েছিল। অনেকে আবার এমনও মনে করছিলেন, এই মুরলীধর সেন লেনের গলিতেই বিজেপির আন্দোলন সীমাবদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। তাই পরিকল্পনা মাফিক এই ঠিকানা বদল।
তবে এটা মানতেই হবে ৬ নং মুরলীধর সেন লেনের সেই অফিস ঘিরে রয়েছে নানা স্মৃতি। স্বাধীনতার আগে থেকেই এই কার্যালয়ের সঙ্গে বিজেপির পরোক্ষ যোগাযোগ। ১৯২৫ সালে এই বাড়ি ভাড়া নেয় জনসঙ্ঘ। তারপর তা জনতা পার্টি এবং ভারতীয় জনতা পার্টির হয়। তবে তা কোনওদিনই বিজেপির স্থায়ী কার্যালয় ছিল না। প্রথম থেকেই ভাড়া নিয়ে এই কার্যালয় থেকে নিজেদের রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করত বঙ্গ বিজেপি। এই কার্যালয় থেকেই ২১-র বিধানসভা নির্বাচনে লড়ে বিধানসভায় প্রধান বিরোধী দলের তকমা পায় বিজেপি। বঙ্গ রাজনীতি থেকে একেবারে হোয়াইট ওয়াশ করে দেওযা হয় অপর দুই শাসক বিরোধী দল কগ্রেস এবং বামফ্রন্টকে। শুধু তাই নয়, নানা সময়ে নানা ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই কার্যালয়ে এসেছেন বহু গণ্যমান্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও। সম্প্রতি এই কার্যালয়ে আসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তবে এবার এসব ঘটনা চলে যাবে ইতিহাসের পাতায়। অপেক্ষা শুধু স্মৃতি বিজড়িত এই কার্যালয় ছাড়ার।