প্রশাসনের আধিকারিকদের প্রত্যক্ষ মদতে গণনাকেন্দ্রে কারচুপি এবং বিজেপির জেতা প্রার্থীদের হারিয়ে দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীদের জয়ী ঘোষণা সহ গণনাকেন্দ্রে একাধিক অস্বচ্ছতার অভিযোগ এনে রায়গঞ্জ পলিটেকনিক কলেজে গণনা কেন্দ্রে বিডিও-র অস্থায়ী কার্যালয়ে বিক্ষোভ বিজেপি নেতৃত্বের। বুধবার ভোরে রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর নেতৃত্বে জেলা বিজেপি সভাপতি বাসুদেব সরকার ও বিজেপি প্রার্থীরা বিডিও-র অস্থায়ী কার্যালয়ে ঢুকে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে বিডিওকে আক্রমণ করে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। সাংসদের উপস্থিতিতেই বিডিও’র চেম্বারে ছুঁড়ে ফেলা হয় টেবিল। চেয়ার ছুঁড়ে মারা হয়। ঘটনাস্থলে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ থাকলেও প্রথমাবস্থায় বিজেপি কর্মীদের এই আক্রমণ সামলাতে ব্যর্থ হয়। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই বিক্ষোভের ঘটনায় রায়গঞ্জের বিডিও শুভজিৎ মণ্ডল আহত হয় বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে। তাকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিন ভোরে রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী দলের জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার ও বেশ কয়েকজন প্রার্থী ও এজেন্টদের নিয়ে রায়গঞ্জ পলিটেকনিক কলেজের গণনাকেন্দ্রে এসে উপস্থিত হয়। গেটে মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনী তাদের ঢুকতে বাধা দিতেই সাংসদ তাদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে। বেছে বেছে বিজেপি কর্মীদের ঢুকতে বাধা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর নামে কমপ্লেন করা হবে বলে সাংসদ তাদের হুমকি দেন। এরপর সাংসদ দলবল নিয়ে গণনাকেন্দ্রে বিডিও’র অস্থায়ী চেম্বারে প্রবেশ করে। চেম্বারের বাইরে পুলিশ থাকলেও বিজেপি কর্মীরা তাদের ঠেলে সরিয়ে দেয়। বিডিও’র বিভিন্ন পক্ষপাতীত্বের অভিযোগ নিয়ে কথা শুরু হতেই বিজেপি কর্মীরা তাকে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ শুরু করে। জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার চেম্বারের টেবিল উলটে ফেলে পরপর দুটি চেয়ার ছুঁড়ে মারে বিডিওকে। সাংসদ বিডিওর পাশে দাঁড়িয়ে তাকে হুমকি দিতে থাকে। অন্যান্য কর্মীরাও বিডিওকে আক্রমণ করে। দপ্তরের এক কর্মী কোনওরকমে আড়াল করে বিডিওকে বাঁচায়। এরপর আহত বিডিওকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তার মাথায় ও বুকে আঘাত লেগেছে।
রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর অভিযোগ, ‘জেলার প্রতিটি গণনাকেন্দ্রে সারারাত ধরে তৃণমূল কারচুপি করেছে এবং তাতে মদত দিয়েছে প্রশাসনিক কর্তারা। তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের গণনা কেন্দ্রের ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কার্যত বসিয়ে রাখা হয়। বিজেপির জেতা প্রার্থীদের সার্টিফিকেট না দিয়ে তাদের কারচুপি করে হারানো হয়েছে এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে জেতানো হয়েছে। এতে মদত দিয়েছে জেলার প্রশাসনিক কর্তারা। স্বাভাবিক কারণেই মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। এই কারচুপির পর বিডিওদের গ্রামাঞ্চলে নিরাপত্তা কে দেবে। তখন পুলিশ থাকবে না।’
রায়গঞ্জের বিডিও শুভজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘তিনি নির্বাচন গণনা প্রক্রিয়ার কাজ চলাকালীন কিছু বোঝার আগেই তার সাংসদের উপস্থিতিতে বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার ও কর্মীরা চড়াও হয়। পুলিশ সব ঘটনা দেখেছে। তারা স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা শুরু করেছে।’