হিমাচলে রাজনৈতিক বিপর্যয় হয়েছে ঠিকই তবে সর্বভারতীয় বিজেপি পদ থেকে জগৎপ্রাকশ নাড্ডাকে কোনও ভাবেই সরাতে রাজি নয় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। মঙ্গলবার বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে এমনটাই ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। এদিন স্যাফ্রন ব্রিগেডের চাণক্য হিসেবে পরিচিত তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ জানান, ‘নাড্ডাকে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি রেখে দেওয়ার প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছেন দলের আরও এক বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা তথা প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেই প্রস্তাব দলীয় তরফে গ্রহণ করা হয়েছে। বিজেপির সংবিধান অনুযায়ী, ভোটের মাধ্যমে দলের পদাধিকারীকে বেছে নেওয়া হয়। কিন্তু গত দু’বছর ধরে অতিমারীর কারণে দলের সদস্যপদ দেওয়া হয়নি। সেই কারণেই নাড্ডার কার্যকালের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব উঠেছিল।’ সর্বসম্মতিতে এই প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে বলে জানান, বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। ফলে আরও এক বছরের জন্য বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি থাকছেন সেই জগৎপ্রকাশ নাড্ডা-ই। অর্থাৎ, তাঁরই নেতৃত্বে ২০২৪-র লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে স্যাফ্রন ব্রিগেড।
শুধু তাই নয়, এদিন নাড্ডার কার্যকালের মেয়াদ বৃদ্ধির ঘোষণার পাশাপাশি এদিন তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ থাকতেও দেখা যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। বলেন, ‘নাড্ডার নেতৃত্বে বিহারের নির্বাচনে দারুণ ফল করেছে দল। মহারাষ্ট্রে ফের সরকারে ফিরেছে এনডিএ। বড় জয় এসেছে উত্তরপ্রদেশ ও গুজরাতেও। এই দুই রাজ্যেই সরকার গঠন করেছি আমরা। এছাড়া বাংলার বিধানসভায় আসন সংখ্যা বাড়াতে পেরেছি আমরা।’
এদিকে চলতি বছরে দেশের মোট ন’টি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনের মুখে রণকৌশল ঠিক করতে দিল্লিতে দু’দিনের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক করছে গেরুয়া শিবির। ওই বৈঠকেই হিমাচল প্রদেশ ও গুজরাত বিধানসভার ভোটের ফলের পর্যালোচনা করেন নাড্ডা। তাঁর দাবি, ‘হিমাচলে মাত্র ০.৯ শতাংশ ভোটে পরাজিত হয়েছে দল। যা এক শতাংশেরও কম। এই হার থেকেও আমাদের শিখতে হবে।’
এদিকে হিমাচলের এই হারের কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, হিমাচলে বিজেপির হারের পিছনে বড় কারণ ছিল দলের গোষ্ঠীকোন্দল। হিমাচলের হার থেকে শিক্ষা নিয়ে ভোটমুখী রাজ্যের নেতাদের পরবর্তী রণকৌশল ঠিক করার পরামর্শ দেন জে পি নাড্ডা। সঙ্গে এও জানান, এই রাজ্যগুলিতে গোষ্ঠীকোন্দল সামলে সর্বসম্মতিতে প্রার্থী ঠিক করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি।
অন্যদিকে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে বঙ্গ বিজেপির ভূয়সী প্রশংসা করতে শোনা যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। বৈঠকে তিনি বলেন, ‘বাংলায় ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছিল। তার পরও লড়াইয়ের ময়দান ছাড়েনি দল। উলটে সংগঠনকে আগের জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা।’