নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: রাত পোহালেই রাখিবন্ধন উৎসব। সেই উৎসবে বড় চমক দিলেন বিষ্ণুপুরের চকবাজারের শিল্পী শিল্পা সূত্রধর। বিষ্ণুপুরের মল্ল আমলের প্রাচীন দশাবতার তাস এই শিল্পকে এবার রাখির মধ্যে ফুটিয়ে তুলে বড় চমক দিলেন শিল্পা। তাঁর এই অভিনব ভাবনার মধ্যে একদিকে এই প্রাচীন শিল্পকে নতুন ভাবে জিইয়ে রাখার সঙ্গে আর্থিক উপার্জনের পথও খুঁজে বের করা সম্ভব হয়েছে।
মল্লরাজাদের প্রাচীন ভূমি বিষ্ণুপুর। এই বিষ্ণুপুরের মাটিতে মল্লরাজ আমল থেকেই জন্ম নিয়েছে একের পর এক হস্তশিল্প। তার মধ্যেই অন্যতম প্রাচীন শিল্প দশাবতার তাস। ইতিহাস বলে মল্লরাজা বীর হাম্বিরের সময় দশাবতার তাস শিল্পের আবির্ভাব হয় বিষ্ণুপুরে। বিষ্ণুপুরের ফৌজদার পরিবারের শিল্পীর হাতে আঁকা বিষ্ণুর দশ অবতার রূপ পায় এই শিল্পে। শিল্পীদের হাতে বিশেষ ভাবে তৈরি এই দশাবতার তাস পৌঁছে যেত মল্লরাজ দরবারে। দরবারে চলত এই দশাবতার তাসের খেলার আসর। এইভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে বিষ্ণুপুরের দশাবতার তাস। কিন্তু কালের নিয়মে আজ রাজাও নেই বিলুপ হয়েছে এই খেলার ছল।
তবে আজ আর খেলা না হলেও শিল্পীদের হাত ধরে কোনওক্রমে টিকে আছে এই শিল্প। অভিনব ভাবনায় দশাবতার শিল্পকে নতুন করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে চলেছেন শিল্পীরা। এবার রাখির মধ্যে ফুটে উঠল বিষ্ণুপুরের মল্লরাজাদের হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত দশাবতার শিল্প। বিষ্ণুপুরের চকবাজারের শিল্পী শিল্পা সূত্রধরের অভিনব ভাবনায় রাখির মধ্যে স্থান পেল বিষ্ণুপুরের প্রাচীন শিল্প। রঙ ও তুলির টানে বিষ্ণুপুর দশ অবতার রূপ পেয়েছে রাখির উপরে। তার উদ্দেশ্য শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা। তাঁর ইচ্ছে অভিনব ভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে যাক এই শিল্প। আর এইভাবেই তিনি বাঁচিয়ে রাখতে চান বিষ্ণুপুরের প্রাচীন শিল্পকে। অভিনবত্বের মধ্য দিয়ে নিজের উপার্জনের রাস্তায় খুঁজে নিতে চান শিল্পী শিল্পা। তাঁর আশা, রাখিতে এই চমক নজর কাড়বে সকলের। এলাকাবাসীও শিল্পার অভিনব ভাবনায় বিষ্ণুপুরের প্রাচীন শিল্পের প্রচার বাড়বে বলেই মনে করছেন।