পাহাড়ের প্রকৃতি যেমন বিচিত্র ঠেক তেমনই বিচিত্র যেন তার রাজনৈতিক আবহও। যখন তখন রাজনৈতিক সমীকরণ বদলায় এই পাহাড়ে। ছিক তেমনই ঘটল বুধবার। কারণ, পাহাড়ের রাজনীতিতে অনীত থাপার প্রভাব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই কোণঠাসা হচ্ছিলেন বিনয়।এই মুহূর্তে জিটিএ-র দখল নিয়েছে অনীতের দল বিজিপিএম। বুধবার আস্থা ভোটে অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টিকে পিছনে ফেলেছে তারা। পাশাপাশি অনীতের দলকে সমর্থন করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।আর এটাই মেনে নিতে পারেননি বনয় তামাং। সেই কারণেই রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গ ত্যাগের ঘোষণা তাঁর।
দার্জিলিং পুরসভার সমীকরণ বদলাতেই বুধবারই এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিনয় তামাং জানান, ‘আমি তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলাম।তৃণমূল চাইলে আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পদক্ষেপ করতে পারে।এই মুহূর্তে দার্জিলিংয়ের গণতন্ত্র ভয়ংকর বিপদে।পাহাড় এবং দার্জিলিংয়ের সমতলের বেশ কিছু নেতা সীমান্তপারের বিভেদকামী শক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।যা ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব এবং দেশের অখণ্ডতার জন্য বিপজ্জনক।’ একইসঙ্গে তামাংয়ের বক্তব্য, পাহাড়ে গণতন্ত্র ফেরাতে এবং পাহাড়ের মানুষকে নাগরিক অধিকার পাইয়ে দিতে আমি সব করতে পারি।আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ করব, পাহাড়ের এই পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি এবং অগণতান্ত্রিক পরিবেশ রুখতে পদক্ষেপ করুন।
এদিকে বিনয়ের এই পদক্ষেপে রাজনৈতিক মহলের ধারনা, বিনয় সরকারিভাবে তৃণমূল ছাড়ায় রাজ্যের শাসক দল পাহাড়ে কিছুটা হলেও ধাক্কা খেল। সঙ্গে তৈরি হল পাহাড় ফের অশান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও। কারণ, পাড়ারে রাজনীতিতে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে নিজের পুরনো দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চায় ফের ফিরতে পারেন বিনয়। এদিকে পাহাড়ে গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে মঙ্গলবারই দিল্লিতে ধরনায় বসেছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিমল গুরুং। সেই সভায় দেখা গিয়েছিল তামাংকেও। কিছুদিন আগে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে পাহাড়ের নেতারা দিল্লিতে একটি বৈঠক করেছিলেন। সেই বৈঠকেও বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিনয়। সেই সময় শাসকদলের তরফ থেকে জানানো হয়, দলের অনুমতি না নিয়েই তিনি ওই সভায় উপস্থিত হয়েছেন। তখনই বিনয়ের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব এবং গুরুংয়ের নৈকট্য স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এই বিমল-বিনয় জুটিই পাহাড়ে বেনজির সন্ত্রাসের পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। পরে অবশ্য বিনয় তামাং গুরুংয়ের সঙ্গ ছেড়ে পৃথক দল গড়েন।পরে সেই দল ছেড়ে যোগ দেন তৃণমূলে।