দুর্নীতিতে নাম জড়ানোয় পার্থর বিরুদ্ধে সরব বিমান, সুজন, দিলীপ

নিয়োগ দুর্নীতিতে বিরোধী দলের নেতাদের নাম শোনা গেছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গলায়। বৃহস্পতিবার আদালতে ঢোকার আগে পার্থর মুখে উচ্চারিত হয়েছে বাম-বিজেপি নেতাদের অনেকেরই নাম। যার মধ্যে রয়েছে, সুজন চক্রবর্তী থেকে শুভেন্দু অধিকারীও। এমনকী শোনা গেছে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নামও। এরপরই পার্থর এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় একেবারে চাঁচাছোলা ভাষায় তৃণমূলকে আক্রমণ করেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। প্রশ্ন তোলেন, রাজ্যের একের পর এক দুর্নীতি নিয়ে চলতে থাকা তদন্তের ভবিষ্যৎ নিয়েও। এখানে মনে রাখা দরকার, এক তদন্তে ডাক পড়েছিল বামফ্রন্টের এই বর্ষীয়ান নেতারও। নিজে হাজিরাও দিয়েছিলেন এই তদন্তের ডাকে। আর সেই প্রসঙ্গে টেনেই এদিন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যানের প্রশ্ন, সেই তদন্তের ভবিষ্যৎ কী হল তা নিয়েও। এরই রেশ ধরে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান শাসক দলকে বিদ্ধ করে জানান, ‘দুর্নীতির পাহাড়ে বসে আছে রাজ্য। আর এত বছর হয়ে গেল তদন্তের কী হল? আমাকেও ডেকেছিল একটা তদন্তে। সেটা ২১ জুলাই-এর। তারই বা কী হল। ধোঁয়াশা তৈরি করা হচ্ছে।’ এখানে আরও একটা ব্যাপার আমাদের মনে রাখতেই হবে, বাম আমলের ৩৪ বছরে বিমান বসু কোনও সরকারি পদে ছিলেন না। এমনকী ১৯৯৩-য়ের ২১ জুলাই ছিলেন না কলকাতাতেও। ২১ জুলাই কমিশনে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে সে কথাই জানান বিমান বসু।
বাম আমলের ত্রুটি নিয়ে শাসক দল যে প্রশ্ন তুলছে সেই প্রসঙ্গে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর বক্তব্য, ‘বাম আমলে যা যা ত্রুটি হয়েছে, তা উদঘাটন করার জন্য বর্তমান সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করুক। এই প্রত্যাশা আমিও করি। তদন্ত করলেই হল। ধোঁয়াশা তৈরি করে লাভ নেই।’
এদিকে বৃহস্পতিবার যাঁর বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন পার্থ, সেই সুজন চক্রবর্তী জানান, দলের কাছে গুরুত্ব হারাতেই এসব বলছেন তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব। এই প্রসঙ্গে সুজন চক্রবর্তী এও জানান, ‘প্রাক্তন মহাসচিবের পাশেই দল নেই। তিনি দেখছেন, একসময় তিনিই সব সমস্যা সমাধান করে দিতেন। এখন দলই তাঁর পাশেই নেই। তাই গুরুত্ব বাড়ানোর চেষ্টা মাত্র।‘ একইসঙ্গে সুজন এদিন এ চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দেন, ‘কোনও শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে চাইলেও পারবেন না মুখ্যমন্ত্রী। কারণ বাম আমলে নিয়োগ স্বচ্ছভাবে হয়েছিল বলেই দাবি করেছেন তিনি, আর তৃণমূল আমলে শুধুই টাকার খেলা।’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘এদের দেখে আমার করুণা হচ্ছে।’ এদিকে আবার দিলীপ ঘোষের নামও শোনা গেছে পার্থর মুখে। এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা বর্তমান কেন্দ্রীয় স্তরের নেতা দিলীপ ঘোষের দাবি, তিনি ২০১১-১২ সালে চিনতেনই না পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। সঙ্গে এও জানান, ‘২০১১-১২ সালে আমি রাজনীতিতেও আসিনি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও চিনতাম না। উনি কার কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন, সেটা উনি বুঝুন। এর সঙ্গে বিজেপিও যুক্ত নেই, দিলীপ ঘোষও যুক্ত নয়। যদি কোনও প্রমাণ থাকে নিয়ে আসুন, তাহলে ওঁর জায়গায় আমি জেলে যাব। আর নাহলে ওঁকে সারাজীবন জেলে থাকতে হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − 13 =