জি-২০ সম্মেলনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সেরে ফেলতে দেখা গেল মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে বিভিন্ন আঙ্গিক নিয়ে কথা হয়। মহাকাশ গবেষণায় একসঙ্গে কাজ করা থেকে শুরু করে, গণতন্ত্র, মানবাধিকার-সহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয় মোদি-বাইডেনের। শুক্রবার সন্ধেয় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে দুই রাষ্ট্রনেতার বৈঠক নিয়ে একটি যৌথ বিবৃতিও প্রকাশ করা হয় হোয়াইট হাউজ থেকে।
সম্প্রতি মহাকাশ গবেষণায় এক নতুন ইতিহাস লিখেছে ভারত। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফল অবতরণ করেছে ইসরোর চন্দ্রযান-৩। চন্দ্রাভিযানে ভারতের এই সাফল্যের জন্য নমোকে অভিনন্দন জানান বাইডেন। এর পাশাপাশি ভারতের প্রথম সৌর মিশন আদিত্য এল-১ সফল উৎক্ষেপণের জন্যও প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান তিনি। মহাকাশ গবেষণায় ইসরো ও নাসার যৌথভাবে কাজ করার বিষয়েও দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে আলোচনা হয়।
শুধু তাই নয়, আগামী দিনে ভারত যাতে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হতে পারে, সেই বিষয়টি নিয়েও এদিনে বৈঠকে মোদিকে আশ্বাস দেন বাইডেন। ভারতকে স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে যুক্ত করে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে পাশে থাকার বার্তাও দিতে দেখা যায় মার্কিন প্রেসিডেন্টকে।
এর পাশাপাশি ৫জি ও ৬জি প্রযুক্তি নিয়ে আরও গবেষণা ও বিকাশের জন্য একটি জয়েন্ট টাস্ক ফোর্স গঠন করার বিষয়েও কথা হয় দুই দেশের রাষ্ট্রনেতার মধ্যে। কথা হয় কোয়ান্টাম শক্তি নিয়েও। দ্বিপাক্ষিক স্তরে কোয়ান্টাম শক্তি নিয়ে ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে কাজের বিষয়ে আগ্রহী বাইডেন। কোয়ান্টাম ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কনসর্টিয়ামে কলকাতার সত্যেন্দ্রনাথ বোস ন্যাশনাল সেন্টার ফর বেসিক সায়েন্সের অংশগ্রহণেরও প্রশংসা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। শিকাগো কোয়ান্টাম এক্সচেঞ্জের সঙ্গে আইআইটি মুম্বইয়ের যুক্ত হওয়ারও প্রশংসা করেন তিনি।
চলতি বছরের জুনে প্রধানমন্ত্রী মোদির ওয়াশিংটন সফরের কথাও উঠে আসে এদিনের এই আলোচনায়। বিশ্ব আঙিনায় বহুমাত্রিক এজেন্ডায় ভারত ও আমেরিকার যৌথ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপের উপরেও জোর দেন দুই রাষ্ট্রনেতা। কথা হয়েছে কোয়াড সম্মেলন নিয়েও।
এখানে বলে রাখা শ্রেয়, কোয়াড গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি আগামী বছর ভারতে বৈঠকে বসছে। ২০২৪ সালের কোয়াড সম্মেলনের আয়োজক দেশ ভারত। আগামী বছরের কোয়াড সম্মেলনেও বাইডেনকে স্বাগত জানানোর জন্য যে অপেক্ষায় রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি, এদিনের বৈঠকে তাও জানান তিনি। একইসঙ্গে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় বাণিজ্য ও অন্যান্য আঙ্গিক নিয়ে আমেরিকার দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করেন মোদি।
দুই দেশের স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ আরও নিবিড় করতে প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রের যে অসীম গুরুত্ব রয়েছে, তা নিয়েও এদিন সহমত মোদি-বাইডেন উভয়েই। আলোচনা হয়েছে সেমিকন্ডাক্টর সাপ্লাই চেন নিয়েও। প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে সেমিকন্ডাক্টর ক্ষেত্রে ভারতে এক নয়া বিপ্লব এসেছে। এদিনের বৈঠকে উঠে আসে এই প্রসঙ্গও।