এসএসসির আন্দোলনরত চাকরি প্রার্থীদের জন্য বড়সর পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। ইদের দিনই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সমস্যার দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শারীর শিক্ষা ও কর্ম শিক্ষার চাকরিপ্রার্থীদের ধর্না মঞ্চে গিয়ে তাদের সঙ্গে বসেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ।ঘরোয়া আলাপচারিতায় তাঁদের দাবি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা আশ্বাস দেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসের দুদিন পরেই বৃহস্পতিবার শরীর শিক্ষা ও কর্মশিক্ষা -সহ সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি নতুন শিক্ষক পদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নেওয়া হল রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে। শুধু তাই নয়,২০১৬ সালে যারা টেট পরীক্ষার উত্তীর্ণ হয়েছেন তাঁদের টেটের শংসাপত্রের মেয়াদও ২০২২ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আইনি বাধা থাকায় সরকারের তরফে আন্দোলনকারীদের সরাসরি নিয়োগের কথা ঘোষণা করা না হলেও আইনি জটিলতা এড়িয়ে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তাদের নিয়োগের জন্যই এই পদক্ষেপ বলে প্রশাসনিক মহলের অভিমত।
এদিন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্যার সমাধান করতে চেয়েছিলেন। তিনি এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত আন্দোলনকর্মীদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথাও বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই ৫২৬১টি অতিরিক্ত পদ তৈরি করা হয়েছে। তাঁর কথাতেই পদক্ষেপ করা হয়েছে।’ শিক্ষামন্ত্রী আরও জানিয়েছেন,স্কুল সার্ভিস কমিশনের সুপারিশ মেনে দ্রুততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলবে। শারীরশিক্ষার জন্য ৮৫০টি পদে নিয়োগ হবে। কর্মশিক্ষায় ৭৫০টি পদে নিয়োগ হবে। মেধা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে ওই পদে নিয়োগ হবে। পরীক্ষার তারিখ নিয়ে দ্রুত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।
এদিকে দীর্ঘ ৬ বছর পর এদিনই ফের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে এসএসসি। সকালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে যে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও জুনিয়র স্কুলের জন্য কেবল প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকা নিয়োগ করা হবে। তবে কত শূন্যপদ রয়েছে তা এদিন স্পষ্ট করে জানায়নি এসএসসি।
স্কুল সার্ভিসের তরফে আরও জানানো হয়েছে, আবেদন কী ভাবে জানানো যাবে, অর্থাৎ তার মোড কী হবে, আবেদনের তারিখ, ফি, লিখিত পরীক্ষার দিনক্ষণ, কত শূন্যপদ রয়েছে ইত্যাদি খুব শিগগির বিজ্ঞাপন দিয়ে জানানো হবে।
স্কুল সার্ভিসের মাধ্যমে নিয়োগ নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিক মামলা ও বিতর্ক চলছে। নিয়োগের স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে প্রার্থীদের অনেকের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে একাধিক মামলায় এখন জর্জরিত এসএসসি। এতোটাই যে স্কুল সার্ভিসের প্রাক্তন উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা কমিটির সদস্যদের জেরা করার জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এমনকি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জেরা করার নির্দেশ দিয়েছিল সিঙ্গল বেঞ্চ। ডিভিশন বেঞ্চ যদিও সেই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে। সার্বিক এই বিতর্কের পরিস্থিতিতে নতুন নিয়োগের খবর ইতিবাচক বলে অনেকে মনে করছেন।