বিধাননগর কমিশনারেটের জালে ফের প্রতারণা চক্রের মূল পাণ্ডা

কলকাতা: ফের প্রতারণা চক্রের পরদা ফাঁস। এই প্রতারণার ঘটনা ঘটে চলতি বছরের মার্চ মাসে। কীভাবে ক্রেডিট কার্ডের পেমেন্ট করবেন সে ব্যাপারে ইন্টারনেটে তথ্য জানতে চেয়েই লাখ লাখ টাকা খোয়ান সল্টলেকের এবি ব্লকের বাসিন্দা ৬১ বছরের অরুণাভ বসু। এরপর বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তাতেই এল সাফল্য। বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানা পুলিশ ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করেছে ওই প্রতারণা চক্রের কিংপিন মাসুদ মণ্ডলকে। উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক ডেবিট কার্ড ও মোবাইল নম্বর। অভিযোগকারী অরুণাভ বসু পুলিশের কাছে করা তাঁর অভিযোগে জানান, একটি বেসরকারি ব্যাংকের থেকে ক্রেডিট কার্ড নিয়েছিলেন তিনি। তবে সেই কার্ড দিয়ে অনলাইনে লেনদেন করতে পারছিলেন না। কীভাবে লেনদেন করবেন, সেই প্রক্রিয়া জানতে চেয়ে ইন্টারনেটে সার্চও করেন। আর সেখান থেকেই একটি নম্বর পান অরুণাভবাবু। আর এই নম্বর ফোন তা চলে যায় প্রতারকদের হাতে। কারণ, ওই সাইটটি তৈরি করেছিল এই প্রতারেকারই। ফলে ওই নম্বরে ফোন যেতেই তাঁকে অন্য একটি নম্বর থেকে পুনরায় ফোন করা হয়। সমস্যা সমাধান করে দেওয়ার নাম করে চাওয়া হয় ক্রেডিট কার্ডের যাবতীয় তথ্য। ফোনের উল্টোদিক থেকে যে সব তথ্য চাওয়া হয় সেই মতো সবই জানান অরুণাভবাবু। আর এরপরই তাঁর ফোনে একটি ওটিপি আসে। সেই ওটিপিও দিয়ে দেন তিনি। আর এরপরই তাঁরা অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয়ে যায় দু’লাখ টাকা।
এই ঘটনায় বিধাননগর কমিশনারেটের তরফ থেকে তদন্ত শুরু হতেই তদন্তকারীরা জানতে পারেন, একটি প্রতারণা চক্র নিজেদের ব্যাংককর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে ফোন করত। আর তারপর ফাঁদে পা দিলেই সর্বস্বান্ত হয়েছেন অনেকেই। কারণ, তাঁধের কথামতো তথ্য আদানপ্রদান করলেই ব্যাংক থেকে টাকা অনলাইনে একটি ওয়ালেটে ট্রান্সফার হয়ে যেত। সেই সূত্র ধরেই একটি অনলাইন ওয়ালেট সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগও করে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানা। তবে ওই ওয়ালেট সংস্থা জানায়, সেখান থেকে ১ লাখ টাকা প্রতারিত ব্যক্তিকে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়। এদিকে পুলিশ জানতে পারে ওই ফোনটি ব্যবহার করা হত ঝাড়খণ্ড থেকে। এদিকে এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ মহম্মদ সফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে আগেই গ্রেপ্তার করেছিল। এরপর এই সফিকুলকে জেরা করেই ঘটনার মূল চক্রী মাসুদ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই ঘটনায় বিধাননগর কমিশনারেট থেকে আরও জানানো হয়েছে যে, মাসুদ নামে এই অভিযুক্ত বিভিন্ন ভুয়ো সিম কার্ড তুলত। ভুয়ো ব্যাংক অ্যাকাউন্টও তৈরি করত। আর সেই ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলির ডেবিট কার্ড নিজের ঠিকানায় আনাত সে। এদিকে অভিযুক্ত মাসুদ মণ্ডলের কাছ থেকে ১৪টি ডেবিট কার্ড এবং ৭টি মোবাইল ফোন সহ একাধিক নথি উদ্ধারও করে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 − seven =