শরৎকালের সাদা কালো ছবির পটভূমিকায় দিগন্ত বিস্তৃত কাশবনের মাঝে অপু দুর্গার চোখ দিয়ে দেখা কালো ধো¥য়া উড়িয়ে ট্রেন ছুটে চলেছে। বছর সত্তর আগে শ্যুট করা ‘পথের পাঁচালি’র বিখ্যাত সেই সাদা কালো দৃশ্য ‘আইকনিক’ হয়ে গিয়েছে।১৯৫২ সালের ২৭ অক্টোবর। দিনটা ছিল সোমবার। পালসিট স্টেশনের কাছেই পথের পাঁচালী-র প্রথম ক্যামেরাবন্দির মুহূর্ত। পথের পাঁচালীর অপু-দুর্গার মতই ভাবাদিঘির মানুষ, ছেলে-মেয়েরা অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছেন সেখানে রেলস্টেশন তৈরির জন্য।
ভাবাদিঘির উপর দিয়ে প্রস্তাবিত রেললাইনের কাজ পরিদর্শন করতে গিয়ে গ্রামবাসীদের চাহিদার কথা জানতে পারেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ অফিসের কর্মীরা। গ্রামবাসীদের সঙ্গে আন্তরিক আলাপচারিতায় তাঁরা জানতে পারেন ভাবাদিঘির স্থানীয় লোকজনও চান, এখানে হোক রেল স্টেশন, যেখান থেকে তাদের সরাসরি অল্প খরচে ও কম সময়ে তারকেশ্বর বা কলকাতায় যাওয়া সহজ হবে।
ভাবাদিঘির আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা রাজনীতি বোঝেন না। তাঁরা চান এই এলাকার সামগ্রিক উন্নতি যা রেললাইন ছাড়া কোনওদিনই সম্ভব হবে নয়। প্রস্তাবিত প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি ক্ষুদ্র মাপের শিল্প বিকাশে সাহায্য হবে সঙ্গে অর্থনৈতিক অবস্থারও উন্নতি হবে। এই রেল লাইন স্থাপনের কারণে কর্মসংস্থানের পথও সুগম হবে। আপামর গ্রামবাসী রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই রেল লাইন তৈরির কাজ সম্পন্ন করার আবেদন জানিয়েছেন।
গ্রামবাসী ও ভারতীয় রেলের সার্বিক প্রচেষ্টায় আগামী দিনে রেল মানচিত্রে জায়গা করে নেবে সেখানকার অপু-দুর্গা আর তাদের ভাবাদিঘির গল্প।