রাজস্থান: জামতাড়া গ্যাং-কে এখন টেক্কা দিচ্ছে ভারতপুর গ্যাং। জামতাড়া গ্যাং সাইবার অপরাধে এখন নাম্বার ওয়ান। এখানে বলে রাখা শ্রেয়, ভরতপুর মূলত কদর পাখিরালয়ের জন্য। পাখিদের সেই অভয়ারণ্যই এখন হয়ে উঠেছে সাইবার অপরাধীদের মুক্তাঞ্চল। তবে সবথেকে মার্কামারা হল ভরতপুরের মেওয়ার গ্রাম। এখানে ঘরে ঘরে ঠগের বাসা। সেক্সটরশন মানে মধু ফাঁদ দিয়ে লোক ঠকানোর কাজ শুরু করে এই গ্যাং। সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপ জমানোর পর নগ্ন ছবি পাঠিয়ে বা ভিডিয়ো কল করে চলে ব্ল্যাকমেলিং। স্ক্রিনশট ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে শিকারিকে সর্বস্বান্ত করে দেওয়া হয়। কিন্তু, এই ফাঁদের সঙ্গে লোকজন এখন পরিচিত হয়ে যাওয়ায় প্রতারণার নতুন পথে হাঁটছে সাইবার অপরাধীরা।
সূত্রে যা খবর মিলছে তাতে ভরতপুর গ্যাংয়ের এখন নতুন টার্গেট বড় পুলিশ অফিসার বা বিচারবিভাগের সঙ্গে যুক্ত কোনও বিশিষ্ট বা কোনও নামকরা লোকজনের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট। প্রথমে এরা অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে। হ্য়াক না করতে পারলে চলে ফেক অ্যাকাউন্ট তৈরি। তারপর সেখান থেকে পুরনো অ্যাকাউন্টে থাকা বন্ধুদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠানো হয়। তৈরি করা হয় কিছু নতুন বন্ধুও। তারপর মেসেঞ্জারে এলেই কেল্লাফতে। সেখানে থাকা বন্ধুদের এমন কিছু লিখে পোস্ট করে যাতে মনে হবে ওই ব্যক্তি খুবই বিপদে পড়েছেন। তাঁর টাকার দরকার। সঙ্গে দেওয়া থাকছে অ্য়াকাউন্ট নম্বর। অর্থাৎ এখানেই পাঠাতে হবে টাকা।
এমন ব্যক্তিরা বিপদ পড়েছেন জানতে পেরে অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। সেই টাকা গিয়ে পড়ে প্রতারিতদের অ্যাকাউন্টে। কিন্তু, যাদের নামে ফেক আইডি তৈরি হল তাঁরা কিছু জানতে পারেন না।
এদিকে আইনজীবী তথা সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘ওরা আগে কারও ফেসবুক অ্যাকাউন্টের উপর ভাল করে নজর রাখে। তারপর সেখান থেকে ছবি-সহ যাবতীয় তথ্য নিয়ে ফেক অ্যাকাউন্ট তৈরি করে। তারপর সেখান থেকে বন্ধু বানিয়ে লোকের কাছে যায়।’ তবে কেন বারবার এই ধরনের ব্যক্তিদেরই বেছে বেছে টার্গেট করা হচ্ছে? পুলিশ বা সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করার জন্যই এটা করে থাকে সাইবার অপরাধীরা। প্রাক্তন গোয়েন্দা প্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ জানান, ‘এই ধরনের উচ্চ পদ মর্যাদার পুলিশ কর্তাদের প্রোফাইল দেখলে কেউ ক্রশ চেক করেন না। তাই সহজেই বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হয়ে যায়। অনেকেই ভাবেন বিপদের সময় যদি তাঁদের হেল্প করা যায় তাহলে মানুষটা ভবিষ্যতে আমার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে। এটাই টার্গেট হওয়ার মূল কারণ।’