চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম এবং রয়্যাল চ্য়ালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর মধ্যে এ মরসুমে শত্রুতা! এ বারের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ক্ষেত্রে একটি কথা ব্যবহার হচ্ছিল, বাইরে বাঘ, ঘরে বিড়াল। অ্যাওয়ে ম্যাচে সব কটিই জিতেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। কিন্তু ঘরের মাঠেই হারের হ্য়াটট্রিক করে বসেছিল আরসিবি। প্রত্যাশা ছিল ঘরের মাঠের সমর্থকদের সামনে জয়ের স্বাদ পাবে আরসিবি। এ দিন রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে সেই প্রত্যাশা আরও বাড়ে। এর দুটো কারণ, বোর্ডে ২০৫ রানের পুঁজি, দ্বিতীয়ত পারফরম্যান্সের নিরিখে রাজস্থান খুব একটা ভালো জায়গায় নেই। এ মরসুমে রাজস্থান রয়্যালস কার্যত চোকার্স হয়ে এসেছে। বেশ কিছু ম্যাচে জয়ের সামনে থেকে হেরেছে তারা। এদিনও তাই হল। শেষ ২ ওভারে ১৮ রান প্রয়োজন ছিল। তবে জশ হ্যাজলউড ও যশ দয়ালের সামনে সেই রানেই ‘চোক’ করল রাজস্থান। এ মরসুমে অবশেষে ঘরের মাঠে জয়ের খরা কাটল আরসিবির।
টস জিতে রান তাড়ার সিদ্ধান্ত নেন রাজস্থান রয়্যালসের স্টপগ্যাপ ক্য়াপ্টেন রিয়ান পরাগ। তাঁর সিদ্ধান্ত দ্রুতই ভুল প্রমাণ করেন আরসিবি ব্যাটাররা। দুই ওপেনার ফিল সল্ট ও বিরাট কোহলি ধামাকাদার ব্য়াটিং করেন। ওপেনিং জুটিতেই ৬১ রান যোগ করেন তাঁরা। সল্টকে ফিরিয়ে প্রাথমিক ধাক্কা দেন আরসিবির প্রাক্তন তথা রাজস্থানের লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারঙ্গা। তবে বিরাট কোহলি ও তিনে নামা দেবদত্ত পাড়িক্কলের দুর্দান্ত জুটি। দেবদত্ত হাফসেঞ্চুরি করেন। বিরাট কোহলি ৭০ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন। রাজস্থানকে ২০৬ রানের টার্গেট দিয়েছিল আরসিবি। রাজস্থান যেভাবে ব্যাট করছিল, জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা।
রাজস্থান ইনিংসের ১৯তম ওভারে অবিশ্বাস্য একটা ঘটনা। সে সময় ১০ বলে মাত্র ১৭ রান বাকি রাজস্থানের। জশ হ্যাজলউডের ওয়াইড ইয়র্কার সরে গিয়ে মারতে যান ধ্রুব জুরেল। সে সময় ৪৭ রানে ব্যাট করছিলেন। ধ্রুব জুরেলের উইকেট গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। বল পিচ হয়ে ব্যাটে সামান্য লেগে কিপার জীতেশ শর্মার কাছে একেবারেই লো ক্য়াচ। জীতেশ আবেদন করলেও আম্পায়ার আউট দেননি। বোলার জশ হ্যাজলউডও আত্মবিশ্বাসী ছিলেন না। তবে জীতেশের আত্মবিশ্বাস দেখে রিভিউয়ের সিদ্ধান্ত। এরপর দেখা যায় বল বাউন্স খেয়ে ব্যাটে লেগে জীতেশের হাতে। অনফিল্ড আম্পায়ারকে সিদ্ধান্ত বদলাতে হয়।
পরের ডেলিভারিতেই জোফ্রা আর্চারকে ফিরিয়ে ম্যাচ জমিয়ে দেন জশ হ্যাজলউড। ক্রিজে প্রবেশ ওয়ানিন্দু হাসারঙ্গার। ১৯তম ওভারে মাত্র ১ রান দিয়ে ২ উইকেট জশ হ্যাজলউডের। শেষ ওভারে মাত্র ১৬ রানের পুঁজি ছিল আরসিবির। যশ দয়াল প্রথম ডেলিভারিতে ফেরান শুভম দুবেকে। তুষার দেশপান্ডে যোগ দেন হাসারঙ্গার সঙ্গে। চূড়ান্ত নাটকীয় পরিস্থিতি। চতুর্থ ডেলিভারিতে টিম ডেভিডের খারাপ থ্রোয়েও অবিশ্বাস্য রান আউট জীতেশ শর্মার। চতুর্থ বলে সিঙ্গল আসতেই জয় কার্যত নিশ্চিত হয়ে যায় আরসিবির। নো বল না হলে এখান থেকে জয়ই প্রাপ্য। যশ দয়াল মাথা ঠান্ডা রেখে বোলিং করে গেলেন। শেষ অবধি ১১ রানের রুদ্ধশ্বাস জয়।