প্রথম দিনের শেষে নিজেদের পারফরমেন্স নিয়ে অখুশি বাংলা, ব্যর্থ সুদীপ-অনুষ্টুপ

রনজি ট্রফির দ্বিতীয় ম্যাচে ইডেন গার্ডেন্সে নামার আগে আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর ছিল বাংলা দল। উত্তরাখণ্ডের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে জয় এনে অভিমন্যু ঈশ্বরণদের মনোবল ছিল তুঙ্গে। কিন্তু ঘরের মাঠে গুজরাটের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ম্যাচে সেই জয়যাত্রা ধরে রাখা সহজ হলো না। প্রথম দিনের খেলা শেষে বাংলার স্কোর ৭ উইকেটে ২৪৪, এবং দল কিছুটা চাপে। দিনশেষে ব্যাট হাতে ভরসা জুগিয়েছেন সুমন্ত গুপ্ত, যিনি অপরাজিত রয়েছেন ৫৮ রানে।

প্রথমে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলা। কিন্তু শুরুর দিকেই ধাক্কা খেতে হয় দলকে। ওপেনার সুদীপ চট্টোপাধ্যায় মাত্র ৩ রানে সাজঘরে ফেরেন। এরপর অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরণ ও সুদীপ কুমার ঘরামির জুটি কিছুটা স্থিতি আনেন। দু’জনের মধ্যে ৭৫ রানের পার্টনারশিপ গড়ে বাংলাকে কিছুটা ভরসা জোগান। তবে অভিমন্যুর ইনিংসটি বড় হয়নি। ৬১ বল খেলে মাত্র ২০ রানে আউট হয়ে ফেরেন তিনি। তাঁর আউটের পরই বাংলার ইনিংসে দেখা যায় ছন্দপতন।

অভিজ্ঞ অনুষ্টুপ মজুমদার কোনও রান না করেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন, আর সুদীপ ঘরামি, যিনি দারুণ ছন্দে ব্যাট করছিলেন, তিনিও ৫৬ রানে আউট হয়ে যান। সেই সময় বাংলার ইনিংসের ভরসা ছিল তরুণ ব্যাটারদের কাঁধে।

তারপর অভিষেক পোড়েল ও সুমন্ত গুপ্ত দলকে উদ্ধার করেন। তাঁদের মধ্যে ৮৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়ে বাংলাকে সম্মানজনক অবস্থানে পৌঁছে দেন। অভিষেক পোড়েল ৫১ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন। ধৈর্যশীল ব্যাটিং ও স্ট্রোকপ্লে মিলিয়ে তিনি গুজরাটের বোলারদের চাপে রাখেন। তবে তাঁকে সঙ্গ দেন তরুণ সুমন্ত গুপ্ত, যিনি ১০৮ বলে অপরাজিত ৫৮ রানে খেলছেন। এই ইনিংসে তাঁর ধৈর্য ও পরিপক্কতা প্রশংসার দাবি রাখে।

বাংলার দলে ফিরে এসেছিলেন অলরাউন্ডার শাহবাজ আহমেদ, কিন্তু তাঁর প্রত্যাবর্তন একেবারেই স্মরণীয় হলো না। মাত্র ২ রানে আউট হয়ে তিনি দলকে হতাশ করেন। দিনের শেষে আকাশ দীপ ৯ রানে অপরাজিত থেকে সুমন্তকে সঙ্গ দিচ্ছেন।

দ্বিতীয় দিনের শুরুতে তাঁদের লক্ষ্য থাকবে ইনিংসকে আরও বড় করা এবং অন্তত ৩৫০ রানের লক্ষ্যে পৌঁছনো, যাতে বোলাররা কিছুটা আরাম পায়। বাংলার বোলিং শক্তি যথেষ্ট দৃঢ় হলেও, ব্যাটিং বিভাগে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

গুজরাটের পক্ষে সিদ্ধার্থ দেশাই দুর্দান্ত বোলিং করেন, ৫৫ রানে ৩টি উইকেট তুলে নেন। চিন্তন গাজা পান ২ উইকেট, আর প্রিয়জিৎসিং জাদেজা ও বিশাল জয়সওয়াল ভাগ করে নেন একটি করে উইকেট।

ইডেনের সবুজ উইকেটে বল কিছুটা ঘুরছিল, যা গুজরাটের স্পিনার ও পেসারদের সহায়তা করেছে। তবে দ্বিতীয় দিনে উইকেট কিছুটা সহজ হলে বাংলার নিম্ন-ক্রমের ব্যাটারদের কাছ থেকে বড় ইনিংসের আশা থাকবে। দলের সমর্থকরা আশা করছেন, সুমন্ত গুপ্ত ও আকাশ দীপের হাত ধরে বাংলার ইনিংস আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছবে এবং ম্যাচে ফের প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুর বাজবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − 18 =