আর পাঁচটা মধ্যবয়স্ক বাঙালি যেমন হন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও ঠিক তেমন। মার্জিত, ভদ্র এবং সুললিত। সম্ভবত জীবনে একবারই তাঁর আবেগের বিস্ফোরণ দেখেছিল ক্রিকেট বিশ্ব। সেটা ২০০২ সালের লর্ডসে। নিজের ৫০তম জন্মদিনে প্রাণ খুলে ভাংড়া নাচলেন বিসিসিআই সভাপতি।
লন্ডনের রাস্তায়, বিখ্যাত লন্ডন আইয়ের সামনে এবং সৌরভের বাড়ির সামনে প্রায় রাতভর দাপাদাপি-নাচানাচি করলেন ‘গাঙ্গুলিয়ান’রা। সৌরভের কাছের এক বন্ধুর উদ্যোগে তাঁর বহু ‘ভক্ত’ গিয়েছিলেন লন্ডনে। তাঁদের উদ্যোগেই এই অনুষ্ঠান। আর তাতে পুরোদস্তুর সঙ্গ দিলেন মহারাজ নিজেও। নিজের ৫০তম জন্মদিনে সৌরভ যেন বাঁধনহারা। বন্ধু এবং অনুরাগীদের সঙ্গে প্রকাশ্যে প্রাণ খুলে নাচলেন বিসিসিআই সভাপতি। সেই মুহূর্তে তাঁকে দেখলে এক মুহূর্তের জন্য হলেও ভুলে যেতে হয় এই ব্যক্তিই এই মুহূর্তে ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বসেবা, বাঙালির সর্বকালের সবথেকে বড় আইকনদের মধ্যে একজন।
সৌরভের জন্মদিনের সেলিব্রেশন অবশ্য একদিন আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। বুধবার রাতেই বিসিসিআই সভাপতির দীর্ঘদিনের সতীর্থ তথা বন্ধু শচীন তেণ্ডুলকর সস্ত্রীক দেখা করে আসেন সৌরভের সঙ্গে। নৈশভোজ, কেক কাটা সবই হয়। যেখানে জয় শাহ, রাজীব শুক্লাদের মতো বোর্ড কর্তারাও ছিলেন অনেকে। সিএবিরও কেউ কেউ লন্ডনে আগাম ‘বার্থডে কেক’ কেটেছেন। রাতে সৌরভ নিজেও কেক কাটেন সানা, ডোনা-সহ পরিবারের সদস্য এবং বন্ধুদের সঙ্গে।
বৃহস্পতিবার জীবনের হাফসেঞ্চুরির চব্বিশ ঘণ্টা আগে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এমন দুটো জায়গায় যান, যার সঙ্গে বঙ্গসন্তানের কৈশোর-যৌবনের একটা যোগাযোগ আছে। আগে খেলতে-টেলতে বিলেত গেলে, এক ভদ্রলোকের বাড়িতে উঠতেন সৌরভ। কাকা বলে ডাকতেন তাঁকে। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার হঠাৎই তাঁর বাড়ি চলে যান সৌরভ। আর দ্বিতীয় যে জায়গায় যান, তার মাহাত্ম্য বোধহয় সৌরভের জীবনে সবচেয়ে বড়। ঘনিষ্ঠদের নিয়ে সদলবলে লর্ডসে গিয়ে হাজির হন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক। যে লর্ডসে এসেছিল তাঁর জীবনের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি, যে লর্ডসে ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি ফাইনালের পর সৃষ্টি হয়েছিল তাঁর জার্সি ওড়ানোর সেই অমর ছবি, যা আজও ভারতীয় ক্রিকেটে লোকগাথা।