স্কুলের সামনে লরির ধাক্কায় ছাত্র মৃত্যুতে রণক্ষেত্র বেহালা

পথ দুর্ঘটনায় স্কুল পড়ুয়ার মর্মান্তিক মৃত্যু বেহালায়। মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি র সৃষ্টি হয়। মৃতদেহ রাস্তায় ফেলে রেখে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশের ভ্যানে। বেশ কয়েকটি সরকারি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। স্থানীয়দের বিক্ষোভে প্রায় ৩ ঘণ্টা কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ডায়মন্ড হারবার রোড। বিক্ষুব্ধ জনতার দাবি, দুর্ঘটনার পর লরিচালককে ধরা গেলেও পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগও এনেছেন স্থানীয়রা। তবে সকাল ১০টা নাগাদ কোনা এক্সপ্রেসওয়ের বাবলাতলা থেকে ওই ঘাতক লরির চালককে গ্রেপ্তার করে হাওড়া ট্র্যাফিক পুলিশ। পরে তাঁকে তুলে দেওয়া হয় কলকাতা পুলিশের হাতে।

এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নামে নামে বিশাল পুলিশ বাহিনী। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। আর তাতেই আরও বিপত্তির সৃষ্টি হয়। স্কুলের সামনেই কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানোয় ক্ষোভের আগুনে ঘি পড়ে।

বড়িশা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘আমার একটি ছেলেকে এই ভাবে হারাতে হবে বিশ্বাস করতে পারছি না। পুলিশ যদি সচেতন হত, তা হলে এই ঘটনা ঘটত না। আমাদের স্কুল থেকে এর আগে সাইকেল চুরি হয়েছিল। চোরকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এই ঘটনার পুরো দায় পুলিশের।’

বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌঁছন কলকাতার পুলিশ কমিশনার (সিপি) বিনীত গোয়েল। তিনি বলেন, ‘যা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। এমনটা নয় যে ওখানে পুলিশ ছিল না। কিন্তু কেন এই ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত করা হবে। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে, তা-ও নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হবে।’

এই দুর্ঘটনার ঘণ্টা দু’য়েক পর শিশুটির মৃতদেহ সরিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। পুলিশের যে ভ্যান এবং বাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, দমকল এসে তা নেভানোর কাজ শুরু করে। আগুন নেভানোর পর সেগুলি রাস্তা থেকে সরানো হয়।  স্থানীয়দের অভিযোগ, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬ টা নাগাদ মাটি বোঝাই একটি লরি প্রচণ্ড গতিতে এসে ধাক্কা মারে বড়িশা হাইস্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সৌরনীল সরকার এবং তার বাবাকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই খুদে পড়ুয়ার। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তার বাবাকে। পরে তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দুর্ঘটনার পরেই ক্ষোভ আছড়ে পড়ে ডায়মন্ড হারবার রোডে। রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়রা। পুলিশ এবং আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় বেহালা চৌরাস্তা সংলগ্ন রাস্তা। রাস্তায় আটকে পরে প্রচুর যান। চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েন নিত্যযাত্রীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six − six =