গুয়াহাটি: ফের বিতর্কে অসমের সাংসদ তথা এআইইউডিএফ দলের প্রধান বদরুদ্দিন আজমল। হিন্দু মহিলাদের নিয়ে এক বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে অসম রাজনীতিতেও তৈরি হয় অসন্তোষ। নারীবিদ্বেষী মন্তব্য করার জন্য সঙ্গে সঙ্গে কড়া প্রতিক্রিয়া দিতে দেখা যায় অসমের বিজেপি বিধায়ক ডি কালিতাকে। বিতর্কের শুরু, অল ইন্ডিয়া ডেমোক্রাটিক ফ্রন্টের প্রধান হিন্দু মহিলাদের বিবাহের বয়স নিয়ে মন্তব্য করার পরই। বদরুদ্দিনের বক্তব্য, হিন্দু মহিলাদের কম বয়সেই বিয়ে করা উচিত। পাশাপাশি এও জানান, বিয়ে এবং সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে হিন্দু মহিলাদের উচিত মুসলিম ‘ফরমুলা’ অনুসরণ করা। এই মন্তব্য কানে আসার পরই বদরুদ্দিন আজমলকে সতর্ক করেন বিজেপি বিধায়ক।
প্রসঙ্গত, বদরুদ্দিন আজমল বলেন, ‘সরকারের নির্দেশ এবং আইন মেনে, ১৮ বছরেই মুসলিম মেয়েরা এবং ২১ বছরের ছেলেরা বিয়ে করেন। কিন্তু, হিন্দুরা ৪০ বছরের আগে বিয়ে করেন না।’ এরই পাশাপাশি তিনি এও বলেন, ‘হিন্দুদের এই সমস্যার কারণে, মুসলিমদের মতন এবং সেই হারে জনসংখ্যা বাড়ছে না। কারণ তারা ঠিক সময়ে বিয়ে করে না। কম বয়সে বিয়ে হলে হিন্দুদের জনসংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে।’ পাশাপাশি এক অত্যন্ত আপত্তিকর মন্তব্যও করতে দেখা যায় তাঁকে। বদরুদ্দিন জানান, ‘এই বিয়ের আগে তাঁরা ২ থেকে ৩টি অবৈধ সম্পর্ক এবং ‘স্ত্রী’ও রাখেন।সেই সময়ে কোন সন্তান হতে দেন না। কারণ, খরচ বাঁচান।’ এরই রেশ ধরে তিনি এও বলেন, ‘ এরপর পরিবারের চাপে বিয়ে করেন।’
আর এখানেই আজমলের দাবি, ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সে মেয়েদের এবং ২১ বছরেই ছেলেদের বিয়ে হওয়ার কারণেই মুসলিমদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর হিন্দুদের উচিত বিয়ের ক্ষেত্রে ‘মুসলিমদের ফর্মুলা’ ব্যবহার করা। এখানে আরও একটি অত্যন্ত নিন্দাসূচক মন্তব্যও করেন বদরুদ্দিন। বলেন, ‘ভালো ফসল হয় একমাত্র উর্বর জমিতে।’
বদরুদ্দিন আজমল এই রকম মন্তব্য করার পরেই শুরু হয় বিতর্ক। অসমের শাসকদলের বিধায়ক ডি কালিতা এই নিয়ে সতর্ক করেন তাঁকে। বিজেপি বিধায়ক স্পষ্ট ভাষায় জানান, ‘এই ধরনের অপমানজনক কথা হিন্দুরা কোন মতেই মেনে নেবেন না। এই রকম কথা বলে বদরুদ্দিন আজমল আমাদের মা এবং বোনদের অপমান করেছেন। রাজনীতি করতে গিয়ে এত নিচে নামবেন না। নিজের মা-বোনদের বিক্রি করবেন না। তাঁদের একটা সম্মান আছে। সেটাকে পদদলিত করবেন না। এই রকম অপমানজক কথার আমরা তীব্র নিন্দা করছি।’ এরই পাশাপাশি আজমলকে চরম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘এবার থেকে সংযত থাকুন। আর তা করতে না পারলে বাংলাদেশ চলে যান। একইসঙ্গে কালিতা বদরুদ্দিনকে এও মনে করিয়ে দেন, ‘এটা ভগবান রাম এবং মা সীতার দেশ। এখানে বাংলাদেশিদের কোন জায়গা নেই। আপনি একজন মুসলিম এবং আমরা হিন্দু। আমাদের আপনার এবং আপনাদের কাছে শিখতে হবে না।’ উল্লেখ্য এর আগেও, অসমের মাদ্রাসা এবং বিভিন্ন ইস্যুতে একাধিকবার বিতর্কিত মন্তব্য করেন বদরুদ্দিন আজমল।