রাস্তার বেহাল দশা, জীবনের ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: রাস্তা নয়, যেন মরণফাঁদ! জীবনের ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করছেন গ্রামবাসীরা। বাঁকুড়া জেলার কোতুলপুর ব্লকের বিবেকানন্দ খেলার মাঠ থেকে বাগরোল আদিবাসী পাড়া পর্যন্ত প্রায় দু’ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল অবস্থা। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কয়েকশো মানুষ এই রাস্তা দিয়ে যাওয়া-আসা করেন, দুই থেকে তিনটি গ্রামের মানুষের কোতুলপুর, বিষ্ণুপুর, আরামবাগ যাওয়ার, এমনকি এলাকার মানুষের হাসপাতালে যাওয়ারও একমাত্র যোগাযোগের পথ এটি।
এছাড়াও লেগো গ্রাম পঞ্চায়েতের বালিঠা, হেদো, ব্রহ্মডাঙা সহ একাধিক গ্রামের মানুষজন কোতুলপুর গোগরা গ্রামীণ হাসপাতালে যাওয়ার শর্টকাট রাস্তা এটি। পাশাপাশি কোতুলপুরের অধিকাংশ চাষি এই রাস্তা দিয়েই মাঠে চাষাবাদ করতে আসেন। এই রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থা এক হাঁটু কাদা, রাস্তায় বড় বড় গর্ত জীবন হাতের মুঠোয় নিয়ে এলাকার মানুষকে যাতায়াত করতে হয়। এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন এলাকার কৃষি প্রধান মানুষ, ßুñল-কলেজের ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে মুমূর্ষ রোগীরা।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বর্ষাকাল এলে এলাকায় অ্যাম্বুল্যান্স বা কোনও চারচাকা গাড়ি ঢুকতে চায় না, ফলে মুমূর্ষ রোগীদের কাঁধে করে নিয়ে যেতে হয় প্রায় দু’ কিলোমিটার পাকা রাস্তা পর্যন্ত। স্বাভাবিকভাবেই রাস্তা নিয়ে চরম দুর্ভোগে এলাকার মানুষজন। তাঁদের দাবি, রাস্তা খারাপের কথা বারংবার জানানো হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনকে. এমনকি জানানো হয়েছে ভোটের আগে যে সমস্ত রাজনৈতিক নেতারা এলাকায় ভোট চাইতে আসেন তাঁদেরকেও। কিন্তু কেউ তাঁদের দিকে মুখ ফিরেও তাকাননি বলে অভিযোগ। গ্রামের বাসি¨াদের কথা কবে ভাববে সরকার, কবে হবে এলাকায় পাকা রাস্তা, সে দিকে চাতক পাখির মতো তাকিয়ে গ্রামবাসীরা।
অন্যদিকে কোতুলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান নিতাই নন্দী, রাস্তা খারাপের কথা স্বীকার করে নিয়ে জানান, এলাকায় অনেক রাস্তা হয়েছে এই রাস্তাটাও হবে।
এদিকে, রাস্তা নিয়ে তো শাসক-বিরোধী তরজা লেগেই আছে। বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দেবপ্রিয় বিশ্বাস দাবি করেন, এর আগের পঞ্চায়েত জোর করে তৃণমূলের দখলে ছিল। এবারের পঞ্চায়েতও জোর করে তৃণমূল দখল করেছে, এই অবস্থা রাখার জন্যই তো জোর করে পঞ্চায়েতগুলি তৃণমূল দখল করে রেখেছে। সাধারণ মানুষের উন্নয়ন নয়,û টাকা লুঠে খাওয়ার জন্য তৃণমূল নেতারা দাঁড়িয়ে আছেন। ২০২৪ আসছে মানুষ মুখিয়ে আছে। ২০২৪ এর পর এদের সরকারটি পড়ে যাবে। যেদিন সরকার পড়বে, সেদিন উন্নয়ন রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকবে না ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে।
অন্যদিকে বিজেপিকে পালটা আক্রমণ তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি দিব্যেন্দু ব¨্যােপাধ্যায়ের। তিনি জানান, ২০২৪ সালে মানুষ কি দেখাবে তা ২০২৩ এর পঞ্চায়েতে দেখিয়ে দিয়েছে। মানুষ তৃণমূল সরকারের পাশে রয়েছে বিজেপি আর কত নাটক দেখাবে? মানুষকে নাটক দেখিয়ে দেখিয়ে তারা আজ শেষ জায়গায় চলে এসেছে। আজকে বিজেপি কোথায়? পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি শেষ হয়েছে, এবং আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি সর্বশ্রান্ত হয়ে যাবে পশ্চিমবাংলা থেকে।
প্রশ্ন উঠছে, এভাবেই কি চলতে থাকবে শাসক-বিরোধী তরজা? মানুষের সমস্যার আদৌও কি সমাধান হবে? সেদিকে তাকিয়ে গোটা কোতুলপুর এবং বগরোলের মানুষজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine − 4 =