জোড়া হারের পর অবশেষে চলতি বিশ্বকাপে জয়ের মুখ দেখল অস্ট্রেলিয়া। লখনউতে মুখে হাসি ফুটল প্যাট কামিন্সদের। একানা স্টেডিয়ামে এর আগের ম্যাচে অজিরা হেরেছিল। আজ অবশ্য তেমনটা হল না। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৫ উইকেটে জিতল অজিরা। অন্যদিকে হারের হ্যাটট্রিক শ্রীলঙ্কার। এই ম্যাচের আগেই কামিন্স বলেছিলেন, তাঁদের কাছে আগামী সবক’টা ম্যাচই ফাইনালের মতো। সেই কথা মাথায় রেখেই খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়াল অস্ট্রেলিয়া।
টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলঙ্কা। এর আগে লঙ্কানরা যে দুটি ম্যাচে খেলেছিলেন, তাতে ক্যাপ্টেনের ভূমিকায় ছিলেন দাসুন শানাকা। থাই মাসেলের চোটে বিশ্বকাপ থেকে তিনি ছিটকে যাওয়ায়, শ্রীলঙ্কা টিমের নেতৃত্বে কুশল মেন্ডিস। লঙ্কানদের ওপেনিং জুটি জমে যায়। ১৩০ বলে ১২৫ রান ওঠে পাথুম নিশঙ্কা ও কুশল পেরেরার জুটিতে। ২১ ওভার অবধি অজিরা শ্রীলঙ্কার ওপেনিং জুটি ভাঙতে পারেননি। অবশেষে ২২তম ওভারে পাথুম নিশঙ্কার উইকেট তুলে নেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। ৬১ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন নিশঙ্কা। এরপর শ্রীলঙ্কা শিবিরে দ্বিতীয় ধাক্কাও দেন কামিন্স। ৭৮ রানের দুরন্ত ইনিংসের পর ফেরেন কুশল পেরেরা।
শ্রীলঙ্কার ওপেনাররা যে জায়গায় দলকে পৌঁছে দিয়েছিলেন, তা অবশ্য বাকিরা ধরে রাখতে পারেননি। নিশঙ্কা-পেরেরার পর চরিথ আসালঙ্কা (২৫) ছাড়া আর কোনও ক্রিকেটার দুই অঙ্কের রান তুলতে পারেনি। শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ে ধ্বস নামান অজি তারকা অ্যাডাম জাম্পা। ৪ উইকেট নেন তিনি। ২টি করে উইকেট নেন মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্স। পুরো ৫০ ওভার খেলতেও পারেনি শ্রীলঙ্কা। ৪৩.৪ ওভারে ২০৯ রান তুলে অলআউট হয়ে যায়।
২১০ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে চতুর্থ ওভারেই অজি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারকে (১১) প্যাভিলিয়নের রাস্তা দেখান দিলশান মধুশঙ্কা। লেগ বিফোরের আবেদনে সাড়া দেন ফিল্ড আম্পায়ার। রিভিউ নেন ওয়ার্নার। তাতে থার্ড আম্পায়ান জানান এটি আম্পায়ার্স কল। এরপর রাগ ও হতাশা ফুটে ওঠে ওয়ার্নারের মুখে। একই ওভারে স্টিভ স্মিথকেও (০) ফেরান মধুশঙ্কা। এরপর অস্ট্রেলিয়াকে ম্যাচে ফেরান মিচেল মার্শ ও মার্নাস লাবুশেন। তৃতীয় উইকেটে এই জুটিতে ওঠে ৫৬ রান। হাফসেঞ্চুরির পর আর বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি মিচেল মার্শ। ৫২ রান করেন তিনি।
মার্শ ফিরলে জশ ইংলিশের সঙ্গে জুটি বাঁধেন মার্নাস লাবুশেন। চতুর্থ উইকেট জমে গিয়েছিল। এই জুটিতে ওঠে ৭৭ রান। লাবুশেন করেন ৪০ রান। এরপর জস ইংলিশ অর্ধশতরান পূর্ণ করেন। তিনি যে ছন্দে ছিলেন ম্যাচ শেষ করে আসতে পারতেন। অবশ্য তা হয়নি। ৫৮ রান করে তিনি ফেরেন। শেষ বেলায় বিধ্বংসী ব্যাটিং দেখা যায় গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের। সঙ্গে ছিলেন মার্কাস স্টইনিস। অপরাজিত ৩১ রানের ক্যামিও ইনিংস ম্যাক্সির। রয়েছে ৪টি চার ও ২টি ছয়। স্টইনিস ২০ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। ৩৫.২ ওভারে ২১৫ রান তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। ফলে ৮৮ বল বাকি থাকতেই ৫ উইকেটে জয় অজিদের। ৬ মেরে ম্যাচ ফিনিশ করেন মার্কাস স্টইনিস। ম্যাচের সেরা ৪ উইকেট নেওয়া অ্যাডাম জাম্পা।