প্রথম দিনেই অস্ট্রেলিয়ার দাপট, অশ্বিনের অভাব ভাবাচ্ছে ভারতকে

প্রতিটা ডেলিভারিই সুযোগ। বোলার কিংবা ব্যাটার মুখিয়ে থাকে প্রত্যেকটা ডেলিভারি সামলাতে। ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হয়। বোলারের কাছে ফেরার আরও একটা সুযোগ থাকে। ব্যাটারের জন্য এক বলই যথেষ্ট উইকেট খোয়ানোর। ধৈর্য ধরে ক্রিজে থাকা, রান করার বল খুঁজে নেওয়া। এরই নাম টেস্ট ক্রিকেট। ওভালে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে এই পরীক্ষায় প্রথম দিন সব দিক থেকেই পাশ করল অস্ট্রেলিয়া। টানা দ্বিতীয় বার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ভারত। গত বার রানার্স। এ বার নজর প্রত্যাবর্তনে। প্রথম দিনের শেষে অবশ্য অধিনায়ক এবং বাকি সদস্যদের ঝুঁকে পড়া কাঁধ, ভারতীয় শিবিরে ভালো বিজ্ঞাপন নয়। দিনের শুরু থেকে শেষ অবধি তাড়া করল আফশোস। ভারতের জন্য প্রথম দিন প্রাপ্তি টস জেতা। দিনের বাকিটা সময় দাপট অস্ট্রেলিয়ার। ইংল্যান্ডের পরিস্থিতি পেসারদের জন্য সুবিধার। কিন্তু ওভাল! সেখানে ম্যাচ গড়ালে সুবিধা পায় স্পিনাররা। তার মধ্যে এখনকার আবহাওয়া শুষ্ক। ভারতীয় শিবির গত বারের ভুল ঢাকতে গিয়ে আরও একটা ভুল করে ফেলল না তো! প্রথম দিনের শেষে অস্ট্রেলিয়া মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে তুলে নিয়েছে ৩২৭ রান! ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ থেকে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল। ফরম্যাট এবং পরিস্থিতি পুরোপুরি আলাদা। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের স্কোয়াডে থাকা অনেকেই প্রথম ব্যাচে ইংল্যান্ডে পৌঁছেছিল। লক্ষ্য, ফাইনালের প্রস্ততি। আইপিএলের প্লে-অফে উঠতে না পারায় রবিচন্দ্রন অশ্বিনও আগে ভাগেই ইংল্যান্ডে প্রস্তুতির সুযোগ পান। কিন্ত তাঁকে বাদ দিয়ে কম্বিনেশন ভাবা হচ্ছে, এমনটা কেউই যেন আন্দাজ করতে পারেননি। বরং ম্যাচের আগে অবধি পরিষ্কার চিত্র ছিল, দুই স্পিনারে নামছে ভারত। টসের সময় চিত্রটা বদলে গেল। গত বার সাউদাম্পটনে হয়েছিল বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল। বৃষ্টি হয়েছিল। দুই স্পিনার খেলিয়ে লাভ হয়নি ভারতের। এ বার মাঠ, প্রতিপক্ষ এবং পরিস্থিতি সবই আলাদা। তাহলে নিজেদের শক্তি থেকে সরে আসা কেন! অশ্বিন থাকা মানে ওভার রেটও ঠিক রাখা। তেমনই ব্যাটিংয়ে তাঁর অবদানও ভোলার নয়। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট অবশ্য অশ্বিনের চেয়ে তৃতীয় স্পেশালিস্ট পেসার হিসেবে উমেশ যাদবকেই খেলানোর সিদ্ধান্ত নিল। তাঁকে দিয়ে সারা দিনে বোলিং করানো হল ১৪ ওভার। চার পেসার বোলিং করায় ওভার রেটও ঠিক রাখতে পারল না ভারত। প্রথম দিন নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি খেলা হল। তাতেও ৯০ ওভার পূর্ণ করা গেল না। তবে সারা দিনে ৮৫ ওভার ফিল্ডিং করার পর ভারতীয় ক্রিকেটারদের মানসিকতা কোন জায়গায় থাকবে, তা সহজেই অনুমান করা যায়। স্টিভ স্মিথ তাড়াহুড়ো করলে হয়তো প্রথম দিনই শতরান পূর্ণ করতে পারতেন। কিংবা পুরো ৯০ ওভার খেলা হলে, সেটাই হত। তেমনই আরও কিছুটা সময় পেলে ১৫০-র সীমানা পেরিয়ে দিন শেষ করতে পারতেন ট্রাভিস হেডও। বাউন্ডারিতে দিন শেষ করেন স্টিভ স্মিথ। প্রথম দিনের শেষে ‘হেড’ উঁচু করেই মাঠ ছাড়ল অজিরা। স্টিভ স্মিথ-ট্রাভিস হেডের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে উঠল ২৫১ রান। কেরিয়ারের ৩১ তম শতরানের সামনে স্মিথ (৯৫)। তেমনই দেড়শো রান থেকে সামান্য দূরে হেড (১৪৬)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − 4 =