কলকাতা: শিয়ালদা মেট্রোর উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ ঘিরে তুঙ্গে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত। প্রথমদিকে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ না জানানোয় শুরু হয় বিতর্ক। তারপর রবিবার রাতে মেট্রোর উদ্বোধনে আমন্ত্রণ জানানো হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সূত্রের খবর, ওই এলাকার সাংসদ ও বিধায়কদেরও আমন্ত্রণ করা হয়। কিন্তু উদ্বোধনের আগের রাতে বিতর্কের পর এমন নিমন্ত্রণে মুখ্যমন্ত্রী থেকে তৃণমূলের মন্ত্রী, নেতারা যে অসন্তুষ্ট, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এই ইস্যুতেই এবার মুখ খুললেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। বললেন, ‘বাড়িতে কার্ড ফেলে দিয়ে এলেই নিমন্ত্রণ হয় না। কুৎসিত রাজনীতি করছে বিজেপি।’ আজ, সোমবার বিকেলে নির্মীয়মাণ হাওড়া ময়দান মেট্রো স্টেশনে হবে মূল অনুষ্ঠান। সেখান থেকেই ভারচুয়ালি রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে শিয়ালদা মেট্রোর উদ্বোধন করবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি (Smriti Irani)। কিন্তু স্মৃতি ইরানির হাত ধরে কেন হবে উদ্বোধন? সেই প্রশ্ন উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি বলেও অভিযোগ ওঠে। তা সামাল দিতে আসরে নামে কলকাতা মেট্রো রেল (Kolkata Metro Railway) কর্তৃপক্ষ। জানানো হয়, সোমবার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেই মতো রবিবার তাঁর কাছে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেওয়া হয়।সোমবার সকালে নিমন্ত্রণ নিয়ে বিজেপিকে তোপ দাগলেন কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘কুৎসিত রাজনীতি করছে বিজেপি। আগেরদিন রাতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে একটা কার্ড ফেলে দিয়ে এল। এটা আমন্ত্রণই না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে যাবতীয় মেট্রো হয়েছে। উনি রেল মন্ত্রী থাকাকালীন টাকা বরাদ্দ করেছেন। জমির ব্যবস্থাও করেছেন। আর আজকে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হবে না। রাতে গিয়ে একটা চিঠি ফেলা হল।’ এরপর বিজেপিকে কটাক্ষ করে তিনি আরও বলেন, ‘একদিন ফিতে কাটবে কাটুক। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, মমতাই ভরসা।’
কুণাল ঘোষের সুরে সুর মিলিয়েছেন ফিরহাদ হাকিমও। তিনি বলেন, “কার্ড ফেলে গেলেই নিমন্ত্রণ হয় না। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর উচিত ছিল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে তারিখ ঠিক করা। একইভাবে মেয়রকেও চিঠি পাঠানো হয়েছে। এতটা অবহেলা সত্ত্বেও যাওয়ার কোনও প্রশ্ন ওঠে না।’ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তিনিও যাচ্ছেন না। এদিকে মেট্রোর উদ্বোধন বিতর্ক নিয়ে সোমবারও তৃণমূলকে বিঁধেছেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহরা। তাঁদের কথায়, ‘মানুষের জন্য কাজে বাধা দিতে চাইছে তৃণমূল।’ প্রসঙ্গত, পূর্ব সূচি অনুযায়ী আজই উত্তরবঙ্গ সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে মেট্রোর তরফে শেষ মুহূর্তে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ফলত তিনি এই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে থাকতে পারবেন না বলেই খবর।