মায়ানমারে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হামলায় কমপক্ষে ৫০ জুন্টা সেনা নিহত হয়েছেন। পিপলস ডিফেন্স ফোর্স গ্রুপ (পিডিএফ) এবং জাতিগত সশস্ত্র সংগঠন (ইএও) সারা দেশে শাসকদের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে যাওয়ায় গত চার দিনে এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। গত চার দিনে জুন্টা সেনাদের প্রাণহানির এসব ঘটনা সাগাইং, ম্যাগওয়ে, মান্দালয় ও তানিনথারি অঞ্চলে এবং চিন, শান, সোম ও কারেন প্রদেশে। অবশ্য কিছু সামরিক হতাহতের পরিসংখ্যান স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি। প্রতিরোধ গোষ্ঠী বলেছে, বুধবার সাগাইং অঞ্চলের ইয়ানমাবিন টাউনশিপে কিয়াক কোন গ্রামের কাছে ১০০ সৈন্যের একটি সামরিক ইউনিটের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে ইউনিয়ন লিবারেশন ফ্রন্টের (ইউএলএফ)। এতে জুন্টা বাহিনীর পাঁচজন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়।
দেশটির সামরিক সরকারবিরোধী ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (এনইউজি) প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, গত মঙ্গলবার মান্দালয় অঞ্চলের সিন্টগু টাউনশিপের শোয়ে পাই গ্রামের পুলিশ স্টেশনে হামলা চালায় পিপলস ডিফেন্স ফোর্স গ্রুপ (পিডিএফ)। রকেটচালিত গ্রেনেড ব্যবহার করা হয় এই হামলায়। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই স্টেশনে কয়েক মিনিট ধরে বন্দুকযুদ্ধ চলে। এতে থানার পুলিশ প্রধানসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। মন্ত্রণালয় আরও দাবি, গত ৪ সেপ্টেম্বর মান্দালয় অঞ্চলের মাদায়া টাউনশিপে তিনটি স্থানীয় প্রতিরোধ গোষ্ঠী যৌথভাবে ল্যান্ড মাইন ব্যবহার করে একটি গ্রামে অভিযান চালায়। ৬০ জন সৈন্যের একটি সামরিক ইউনিটে অতর্কিত হামলা করে। এতে ১৫ জন জুন্টা সেনা নিহত হন।
এদিকে ম্যাগওয়ে অঞ্চলের সো শহরে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। সো পিডিএফ বলেছে, মঙ্গলবার রাতে ম্যাগওয়ে অঞ্চলের সো শহরে শাসক বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এছাড়া তানিনথারিতে আবারও সামরিক চৌকিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ওক অ্যাওয়ে কলাম দাওয়েই বলেছে, অন্যান্য স্থানীয় প্রতিরোধ গোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে তারা বৃহস্পতিবার তানিনথারি অঞ্চলের দাওয়েই টাউনশিপের মাউং মে শাউং গ্রামের কাছে সামরিক চেকপয়েন্টে হামলা করে। এতে দুজন সেনা নিহত এবং তিনজন আহত হন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে মায়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এর পর গণতন্ত্রের দাবিতে রক্তাক্ত সংগ্রামে লিপ্ত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এ দেশটিতে বিভিন্ন গোষ্ঠী সশস্ত্র প্রতিরোধ শুরু করে।