সিমলা: প্রবল বৃষ্টিতে হিমাচল প্রদেশে ফুঁসছে নদী। সোলানে মেঘভাঙা বৃষ্টি ও সিমলায় শিবমন্দিরে ধসে এখনও পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যুর খবর মিলল। রবি ও সোমবার দু’দিনে মোট ২১ জন মারা গিয়েছেন। এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু। সিমলার ডেপুটি কমিশনার আদিত্য নেগি সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, ভূমিধসের ঘটনায় অনেক মানুষ মাটিচাপা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। অন্য দিকে, ফাগলি এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়ি মাটির নীচে চাপা ধসে গিয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, হিমাচলে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
ভারী বর্ষণের জেরে রবিবার সোলান জেলায় মেঘভাঙা বৃষ্টিতে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। সোলানের ডিভিশনাল কমিশনার মনমোহন শর্মা জানিয়েছেন, রবিবার রাতে মেঘভাঙা বৃষ্টির কবলে পড়ে হিমাচলের সোলান এলাকার জাডোন গ্রাম। জলের তোড়ে ভেসে যায় একাধিক বাড়ি। এই ঘটনায় মোট সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ছ’জনকে।
অন্য দিকে, সোমবার সকালে সিমলা শহরের সামার হিলের শিবমন্দিরে ধসে এখনও পর্যন্ত ন’জনের মৃত্যু হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ভেঙে পড়া কংক্রিটের চাঁইয়ের নীচে এখনও চাপা রয়েছেন ১৫-২০ জন পুণ্যার্থী। গত দু’দিন ধরে হিমাচলে বৃষ্টি হচ্ছে প্রচণ্ড। বিভিন্ন জায়গায় ভূমি ধস শুরু হয়েছে। সোমবার সকালে সিমলার শিবমন্দিরে অন্তত ৫০ জন পুণ্যার্থী জড়ো হয়েছিলেন। ভারী বৃষ্টির জেরে মন্দিরের একাংশ হঠাৎ করেই হুড়মুড়িয়ে ধসে পড়ে। কংক্রিটের নীচে চাপা পড়ে যান মন্দিরের ভিতরে থাকা পুণ্যার্থীদের অনেকে। এখনও পর্যন্ত ৯টি দেহ উদ্ধার করা গিয়েছে। তবে আরও অনেকে ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন বলে আশঙ্কা প্রশাসনের। শুরু হয়েছে উদ্ধার কাজও।
মুখ্যমন্ত্রী সুখু হিমাচলের সাধারণ মানুষকে বাড়ির ভিতরে থাকার এবং নদীর ধারে না যাওয়ার আবেদন করেছেন। সংবাদমাধ্যমে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জনগণকে ভূমিধসপ্রবণ এলাকাগুলি থেকে দূরে সরে যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন। পাশাপাশি এই সঙ্কটসময়ে পর্যটকদের সে রাজ্যে না আসারও অনুরোধও তিনি করেছেন। কয়েক দিন ধরেই হিমাচলে ভারী বৃষ্টিপাত চলছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির পরিমাণ আরও বেড়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে নদীর জলস্তর। ফুঁসছে খরস্রোতা বিপাশা নদী। মুহুর্মুহু পাহাড়ি ধসে ব্যাহত হয়েছে জনজীবন। বৃষ্টি এবং ভূমিধসের কারণে সে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৭৫২টি রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবং পড়ুয়াদের নিরাপত্তার কথা ভেবে হিমাচলের সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সোমবার থেকে বন্ধ থাকছে।
মৌসম ভবনের পূর্বাভাস অনুযায়ী, হিমাচলে এখনই থামছে না বৃষ্টিপাত। হিমাচলের চাম্বা, কাংড়া, হমিরপুর, মান্ডি, বিলাসপুর, সোলান, শিমলার বিচ্ছিন্ন জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে কুলু এবং সিরমাউরে।
