দক্ষিণ কোরিয়ায় হ্যালোইন উৎসব চলাকালীন পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ১৫১ জন। আনন্দের মুহুর্ত নিমেষে বদলে গেল শোকের আবহে। প্রিয়জনকে হারানোর হাহাকার স্তব্ধ করে দিল দক্ষিণ কোরিয়ার (South Korea) রাজধানী সিওলে। স্থানীয় সময় শনিবার গভীর রাতে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই কিশোর-কিশোরী ও যুবক-যুবতী। মৃতদের মধ্যে ১৯ জন বিদেশী নাগরিকও রয়েছে। কমবেশি জখম হয়েছে অন্তত ২০০ জন। তাঁদের মধ্যে অনেকের অবস্থাই সংকটজনক। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সাড়ে ৩০০-রও বেশি মানুষের খোঁজ মিলছে না।
কোভিড অতিমারির পর সোলে এ বছর বড় করে হ্যালোউইন উদ্যাপনের আয়োজন করা হয়েছিল। আনন্দে সামিল হতে শহরে জড়ো হয়েছিলেন অন্তত হাজার দশেক মানুষ। সোমবার ৩১ অক্টোবর হ্যালোউইন। জানা গিয়েছে, সোলের প্রাণকেন্দ্রে একটি বাজারে কেনাকাটায় ব্যস্ত ছিলেন মানুষজন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, সিওলের আইটেওন জেলায় ওই বাজারে প্রায় লক্ষ লোকের ভিড় হয়েছিল। একটি সঙ্কীর্ণ গলিতে কয়েকশো দোকানের ভিতর বহু ক্রেতা-বিক্রেতা ছিলেন। রাস্তায়ও জমায়েত ছিল। তখনই এই বিপর্যয় ঘটে। ভিড়ের চাপে আতঙ্কিত হয়ে অনেকে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন বলে সূত্রের দাবি।
স্থানীয় প্রশাসন বলছে, ইটেওনে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়েছিল। সংকীর্ণ গলি এলাকায় এই ভিড়তে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছিল পুলিশ। এরমধ্যে হঠাৎই হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। আর সেই হুড়োহুড়িতেই পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ১৫১ জনের। মৃতদের মধ্যে বিদেশি পর্যটকও রয়েছে। তবে তাঁরা কোন দেশের নাগরিক, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এদিকে জখম হয়েছেন অন্তত ২০০ জন। তাঁদের মধ্যে ১৯ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। থানায় ইতিমধ্যে ৩৫০টি নিখোঁজ ডায়েরি জমা পড়েছে। অর্থাৎ বহু মানুষও তাঁদের প্রিয়জনদের হদিশ পাচ্ছেন না।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইওন সাক ইওল। শোকজ্ঞাপন করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন-সহ একাধিক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা। কীভাবে এই ঘটনা ঘটল তা জানতে টাস্ক ফোর্স গঠন করে তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রেসিডেন্ট। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, মৃতদের পরিচয় জানার কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি কীভাবে এই বিপর্যয় ঘটল তা জানতে মাঠে নেমেছে ফরেনসিক দলও।