চোখের দৃষ্টি ফেরাতে টোটো নিয়ে কর্নিয়া সংগ্রহ কোন্নগরের আশিসের

মানুষের পাশে থাকার বার্তা নিয়ে মানবিক কাজে ব্রতী হলেন হুগলি জেলার কোন্নগরের বাসিন্দা আশিস। অন্যের চোখে দৃষ্টি ফেরাতে টোটো নিয়ে কর্নিয়া সংগ্রহ করেন কোন্নগরের আশিস। দেশের কাজে দশের কাজে তোমার আমার অঙ্গীকার মরার পরে দু’চোখ দেব দৃষ্টি যাদের অন্ধকার, এই অঙ্গীকারকে সামনে রেখে দীর্ঘ আট বছর ধরে অন্ধের চোখে দৃষ্টি ফেরাতে কাজ করে চলেছে আশিস ব্যানার্জি। বছর ৪৫ এর আশিসবাবু পেশায় একজন টোটো চালক। মরণোত্তর চক্ষুদানের অঙ্গীকার করা কারও মৃত্যুর খবর পেলেই ডাক পড়ে আশিসদার। তিনি কর্নিয়া সংগ্রহ করে পাঠান কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে প্রশিক্ষণ পেয়ে দীর্ঘ ৮ বছর ধরে তিনি এই কাজ করেন। ৮ বছরে প্রায় সাড়ে তিনশো কর্নিয়া সংগ্রহ করেছেন তিনি। এই কাজ করে তিনি পয়সা পান এমনটা একদমই নয়, বরং তাকে অধিক পরিশ্রম করতে হয় উপার্জন করার জন্য। জানা গিয়েছে, স্ত্রী, পুত্র ও মাকে নিয়েই সংসার তার। তবে এই তারই কাজে কখনো বাধা দেয়নি তার পরিবার, বরং উৎসাহ দিয়েছে তাকে। জেলার যেখান থেকে ডাক পড়ে সেখানেই যান তিনি। হুগলি জেলার পাশাপাশি হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বর্ধমান সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে কর্নিয়া সংগ্রহ করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পাঠিয়েছেন। প্রায় ৩৫০ জোড়া কর্নিয়া ইতিমধ্যেই তিনি সংগ্রহ করেছেন। তারই কাজে দৃষ্টি ফিরে পেয়েছেন অনেকেই। বিভিন্ন সংস্থার থেকে মিলেছে শংসাপত্রও। এই বিষয়ে
আশিসবাবু জানান, কর্নিয়া সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ তিনি পেয়েছিলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে। মেডিক্যালের চক্ষু বিভাগে তিনি একদিন দেখাতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তিনি দৃষ্টিহীন মানুষদের অসহায়তা অনুভব করেন। তারপর থেকে তিনি প্রতিজ্ঞা করেন, সেই মানুষগুলির জন্য কিছু করার। তখন থেকে তিনি যুক্ত মরণোত্তর চক্ষুদান আন্দোলনের সঙ্গে। সবমিলিয়ে কোন্নগরে বাসিন্দা আশিসবাবুর মানবিক কাজকে সাধুবাদ জানায় এলাকার মানুষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen + sixteen =