নিজস্ব প্রতিবেদন, আসানসোল: মঙ্গলবার দিল্লির বুকে পুলিশ দ্বারা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূলের সাংসদ ও বিধায়ক দের আটক করে দীর্ঘক্ষণ রাখার প্রতিবাদে যখন পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে এই ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হয়ে আন্দোলনে নামেন তৃণমূল কর্মী ও সমর্থকরা, ঠিক তার কয়েক ঘণ্টা অতিবাহিত হতে না হতেই বিজেপির ‘আমার মাটি, আমার দেশ’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বুধবার একপ্রকার রণক্ষেত্রের চেহারা দেখা গেল আসানসোল শহরের জিটি রোডে। বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভার বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল ও জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে হওয়া এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বিজেপির নেতা ও কর্মীরা জিটি রোডের তিনটি জায়গায় পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে দেন বলে অভিযোগ। আর এনিয়ে পুলিশের সঙ্গে বিজেপির নেতা ও কর্মীরা ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন।
পুলিশের বাধা পেয়ে ঘটনার প্রতিবাদে বিধায়ক ও জেলা সভাপতির নেতৃত্বে বিজেপির নেতা ও কর্মীরা আসানসোল দক্ষিণ থানার সামনে ধরনা বিক্ষোভে বসে পড়েন। ধরনা ওঠাতে পুলিশ তাঁদেরকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। সমগ্র ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেশ কিছুক্ষণ জিটি রোডে গাড়ি চলাচল একবারেই বন্ধ হয়ে যায়।
এ প্রসঙ্গে অগ্নিমিত্রা পাল জানান, দিল্লিতে যখন নাটক করতে গিয়েছেন তৃণমূলের দল, তখন তাঁদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি যা পুলিশের কাছে আগেই জানানো হয়েছে, তা সত্ত্বেও তাঁদের কর্মসূচিতে তৃণমূলের নির্দেশে বাধা দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের এই ভূমিকায় তৃণমূলের দলদাস হওয়ার প্রমাণ আরও একবার সামনে এল।’
বুধবার সকালে জিটি রোডের পুরনো রামকৃষ্ণ মিশন মোড় সংলগ্ন শনি মন্দিরের সামনে থেকে কলসি নিয়ে ‘আমার মাটি, আমার দেশ’ কর্মসূচি শুরু হয়। মাথায় কলসি নিয়ে এর নেতৃত্বে ছিলেন বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল ও বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়, রাজ্য নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় সহ স্থানীয় নেতৃত্ব এবং দলীয় কর্মীরা। কিন্তু আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশের তরফে বিজেপির এই কর্মসূচিকে আটকাতে শনি মন্দির, ট্র্যাফিক কলোনি মোড় ও রাহালেন মোড়ে তিনটি ব্যারিকেড করা হয়। মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী, র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স ও কমব্যাট ফোর্স। কিন্তু বিজেপির নেতা ও কর্মীরা পরপর তিন জায়গায় পুলিশের দেওয়া ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ তা আটকানোর চেষ্টা করলেও, বেশ কিছু ক্ষেত্রে বিজেপি কর্মীরা ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যেতে থাকেন। এরপর বিজেপির নেতা ও কর্মীরা হেঁটে আসানসোল দক্ষিণ থানার সামনে এসে ধরনা বিক্ষোভে বসে পড়েন। এই ঘটনার দীর্ঘক্ষণ পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।