রাজ্য রাজ্যপাল সংঘাত এবার চরম মাত্রায় পৌঁছাল। সূত্রে খবর, রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত পাঠালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কারণ, হিসেবে রাজভবনে তরফ থেকে যা জানা গেছে তা হল, রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে আলোচনার জন্য রাজভবনে ডেকে পাঠানো হয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে। তিনি উপস্থিতি না থাকাতেই এই পদক্ষেপ।
প্রসঙ্গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নের সময় যে বিভিন্ন হিংসার ঘটনা সামনে এসেছে তা নিয়ে আলোচনার জন্য গত সোমবার রাজীব সিনহাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু কাজ আছে বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা রাজ্যপালের সেই তলব এড়িয়ে যান। এরপর বুধবারও রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেননি কমিশনার। এরপরই কমিশনারের জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন রাজ্যপাল। এখানে বলে রাখা শ্রেয়, রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের জয়েনিং রিপোর্টে রাজ্যপালের স্বাক্ষরের প্রয়োজন। সেই রিপোর্ট রাজ্য সরকার পাঠিয়েছিল রাজভবনে। এবার তা ফেরত পাঠালেন রাজ্যপাল। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘রাজ্যের সংবিধানিক প্রধান রাজ্যে সংবিধানিক সংকট তৈরি করতে চাইছেন বলে আমার মনে হচ্ছে। কারণ, রাজ্য রাজভবনের মত অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ করে। সেই মতো পঞ্চায়েত ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। কয়েকটি ব্লক ছাড়া মনোনয়ন শান্তিপূর্ণ হয়েছে। কিন্তু রাজ্যপাল বিজেপির অঙ্গুলি হেলনে চলছেন। এ বিষয়ে তিনি পূর্বসূরি জগদীপ ধনখড়কেও ছাড়িয়ে গেলেন। আশা করব তাঁর শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। সাংবিধানিক সংকট তৈরি থেকে তিনি বিরত থাকবেন। এবং প্রয়োজনে রাজ্য সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করবেন।‘
এ বিষয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘নির্বাচন কমিশনার পদে রাজীব সিনহাকে নিয়োগ করা যে ঠিক সিদ্ধান্ত হয়নি তা রাজ্যপাল বুঝতে পেরেছেন। আদালতও এই মর্মে ভর্ৎসনা করেছে। এ রকম একটা পদে থেকে কমিশনার নির্বাচন কমিশনকে হেয় করছেন।‘ এই ইস্যুতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, ‘রাজ্যপাল ডাকলেও কমিশনার যাচ্ছেন না। তাই তিনি করেছেন।‘
এখানে আরও একটা কথা বলতেই হয় যে নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে বুধবারই কড়া বার্তা দেয় আদালত। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি এদিন কমিশনারের উদ্দেশে বলেন, ‘চাপ রাখতে না পারলে ছেড়ে দিন, রাজ্যপাল নতুন কমিশনার নিয়োগ করবেন।’