কুঁচকির চোটের জন্য চলতি কমনওয়েলথ গেমস থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন নীরজ চোপড়া। অলিম্পিক্স সোনা জয়ী জ্যাভলিন থ্রোয়ার বার্মিংহ্যামে নামলে, ভারতকে যে, সোনা এনে দিতেন, তা একপ্রকার বলে দেওয়াই যায়। নীরজের অনুপস্থিতিতে তাঁর বন্ধু ও পাকিস্তানি প্রতিযোগী আর্শাদ নাদিম সোনা জিতে বাজিমাত করেন। গত রবিবার কমনওয়েলথে আর্শাদের বর্শা ৯০.১৮ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করে রেকর্ড করেছিল। জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্যের স্বাদ পান তিনি।
আর্শাদই পাকিস্তানের প্রথম ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড অ্যাথলিট হিসাবে বিগত ৬০ বছরে দেশকে প্রথম কমনওয়েলথ সোনা এনে দিয়েছেন। সোনা জিতেও আর্শাদের মনে এক অন্য আক্ষেপ! কী সেই আক্ষেপ? কমনওয়েলথে বন্ধু নীরজের অভাব বোধ করেছেন তিনি। ম্যাচের পর আর্শাদ বলেন, “দেখুন নীরজের অভাব আমি বোধ করেছি এখানে। ও প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আরও মজা হতো। আসলে আমরা সত্যিই খুব ভাল বন্ধু। দেখুন, চোট-আঘাত তো খেলারই অঙ্গ। আমি চাইব ঈশ্বর ওকে সুস্বাস্থ্য দিক। আগামীর ইভেন্টের জন্য নীরজকে আমার অনেক শুভেচ্ছা।”
জ্যাভলিন বিশ্বে আর্শাদ কিন্তু পরিচিত নাম। নীরজের সঙ্গে ট্র্যাকে প্রতিদ্বন্দিতা ও খেলার বাইরে বন্ধুতার জন্যও তিনি খবরে আসেন। ২০১৮ সালে জার্কাতায় অনুষ্ঠিত এশিয়াডে নীরজ সোনা জিতেছিলেন। আর্শাদ পেয়েছিলেন রুপো। তবে থেকেই ওয়াঘার এপার ও ওপারের দুই অ্যাথলিটের দারুণ সম্পর্ক। ঘটনাচক্রে গতবছর ৭ অগাস্ট টোকিওতে দেশকে সোনা এনে দিয়েছিলেন নীরজ। তাঁর সোনা জয়ের বর্ষপূর্তির দিনেই বন্ধু আর্শাদ কমনওয়েলথে সোনা জিতেছেন।আর্শাদের কেরিয়ারে কমনওয়েলথে সোনা জয়ই এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড়। গত মাসে মার্কিন মুলুকে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে রুপো জিতেছেন নীরজ। চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন গ্রেনাডার অ্যান্ডারসন পির্টাস। সেই অ্যান্ডারসনকে পিছনে ফেলেই আর্শাদ বার্মিংহ্যামে সোনা জেতেন। অ্যান্ডারসন জিতেছেন রুপো।
অঞ্জু ববি জর্জের পর ভারতের দ্বিতীয় অ্যাথলিট হিসাবে বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে দেশকে দ্বিতীয় পদক এনে দিয়েছিলেন নীরজ। ২০০৩ সালে প্যারিসে অঞ্জু লং জাম্পে ব্রোঞ্জ পেয়েছিলেন। ১৯ বছর পর অঞ্জুকে ছাপিয়ে নীরজ রুপো জিতে দেশর মুখ বিশ্বমঞ্চে ফের উজ্জ্বল করেছিলেন। এই ইভেন্টে নামার সময়ই নীরজ চোটের কারণে অস্বস্তি অনুভব করেছিলেন। অবশেষ তিনি বাধ্য হন কমনওয়েলথে না নামতে।