এর আগে বাংলায় এসে বলে গিয়েছিলেন, বাংলার বুকে যারা নারী নির্যাতন করে, যারা অপরাধ করে তাঁদের উলটে ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। সেই নিয়ে বিস্তর জলঘোলাও হয়েছিল। কিন্তু দমছেন না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এবার নয়া নিদান দিয়ে গেলেন অমিত শাহ। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলে গেলেন, অপরাধীদের পাতাল থেকে খুঁজে এনেও শাস্তি দেওয়া হবে।
এদিন মেমারিতে বর্ধমান-পূর্ব লোকসভা আসনের বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকারের সমর্থনে জনসভা করেন শাহ। ওই সভা থেকেই তাঁর হুঁশিয়ারি, ভোট-পরবর্তী হিংসায় নিহত বিজেপি কর্মীদের হত্যাকারীদের পাতাল থেকে খুঁজে বার করে এনে জেলে ভরবে বিজেপি। এদিন মেমারির সভায় শাহ বলেন, ‘রাজ্যে বিজেপি কর্মীদের হত্যা করেছে তৃণমূলের গুন্ডারা। সরকার গঠনের পর সকলকে পাতাল থেকেও খুঁজে বার করে এনে জেলে পাঠানোর কাজ করবে বিজেপি।’
এদিন রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে সার্বিকভাবে আক্রমণ করেন শাহ। তাঁর অন্যতম হাতিয়ার ছিল ধর্মীয় মেরুকরণ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলে গেলেন, মোদিজি যেখানে রামমন্দির উদ্বোধন করে দেশজুড়ে রামভক্তির ঝড় তুলেছেন, সেখানে বাংলার শাসকদল যোগ দেয়নি অনুপ্রবেশকারীদের ভয়ে। অমিত শাহর কথায়, ‘মন্দির উদ্বোধনে মমতা দিদি ও ভাইপোকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু অনুপ্রবেশকারীদের ভয়েই তাঁরা রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার দিন যাননি।’
এদিন পূর্ব বর্ধমানের মেমারি রসুলপুরে জনসভা করেন অমিত শাহ। বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘যাঁর মন্ত্রীর ঘর থেকে একান্ন কোটি টাকা উদ্ধার হয়, তাঁকে তো জেলে যেতেই হবে। আপনি গরিবের টাকা লুঠ করেছেন মমতা দিদি। মোদিজির পাঠানো দশ লক্ষ কোটি টাকা লুঠ করেছে আপনি ও আপনার সরকার।’ সভা থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আক্রমণ করেন শাহ। তাঁর কথায়, ‘মমতাদি ভাইপোকে মুখ্যমন্ত্রী বানাতে চান। বাংলার মানুষই ঠিক করবে, তারা ভাইপোর রাজত্ব চায় নাকি মোদিজির সুশাসন চায়।’ মোদিকে ফের প্রধানমন্ত্রী করতে বর্ধমান পূর্বের বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকারকেও জেতানোর আবেদন জানান অমিত শাহ।
উন্নয়ন ইস্যুতেও মঙ্গলবার তৃণমূল সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন শাহ। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের মানুষের জন্য কী কী করেছেন, তার খতিয়ান দেন। তিনি বলেন, ‘বারো কোটি মানুষের বাড়িতে শৌচালয় তৈরি করে দিয়েছেন মোদিজি। একই সঙ্গে চার কোটি মানুষকে পাকা ঘর করে দেওয়া হয়েছে। আর মোদিজির পাঠানো উন্নয়নের পুরো টাকাটা বাংলার সরকার লুঠ করে নিয়েছে।’ রামমন্দির ইস্যুতে এদিন শাহ কংগ্রেস-তৃণমূল এবং বামেদের একযোগে আক্রমণ করেন। তাঁর কথায়, ‘মোদিজি ক্ষমতায় এসে রামমন্দির মামলা জিতেছেন, ভূমি পুজো করেছেন এবং রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠাও করেছেন। আর তৃণমূল-কংগ্রেস এবং কমিউনিস্টরা রামমন্দিরের বিরোধিতা করেছে।’ তৃণমূল সরকার কেন্দ্রের প্রকল্পগুলির নাম পরিবর্তন করে দিচ্ছে বলে বর্ধমানের সভা থেকে অভিযোগ করেন অমিত শাহ।