গ্রেপ্তার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দর কেজরিওয়াল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই তাঁর বাড়িতে চলছিল তল্লাশি। টানা ২ ঘণ্টার জেরা চলার পর ইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি। দিল্লির আবগারি নীতি মামলায় ন’বার এড়িয়েছেন সমন। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের পর এবার গ্রেপ্তার হলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। তবে কেজরিওয়াল মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করবেন কি না তা এখনও জানা যায়নি। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর ফোন। তার পরেই গ্রেপ্তার। মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের আশপাশে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা।
দিল্লি মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেপ্তারির পরেই তাঁর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন আপ কর্মী, সমর্থকেরা। গোটা রাজধানী জুড়েই প্রতিবাদ শুরু করেন তাঁরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই টেনেহিঁচড়ে বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়। সূত্রের খবর, ১২ জনের ইডি আধিকারিকের একটি দল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে যায়। তল্লাশি অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় নথি দেখিয়েই কেজরিওয়ালের বাড়িতে প্রবেশ করে তারা। তাঁর বাসভবনের সামনে মোতায়েন করা হয় দিল্লি পুলিশ। উল্লেখ্য, দিল্লি হাইকোর্ট আবগারি মামলায় কেজরিকে রক্ষাকবচ দিতে অস্বীকার করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইডির একটি দল পৌঁছে যায় তাঁর বাড়ি। অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন কেজরিওয়াল। জরুরি ভিত্তিতে মামলা শোনার আর্জি জানানো হয়েছে।
এই গ্রেপ্তারির পর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে দিল্লির শিক্ষামন্ত্রী অতিশী মারলেনার বক্তব্য, গত দু’বছর ধরে আবগারি দুর্নীতি মামলার তদন্ত করছেন অন্তত ৫০০ আধিকারিক। তার পরেও এখনও পর্যন্ত এক টাকা উদ্ধার করতে পারলেন তাঁরা। কী যুক্তিতে কেজরিকে গ্রেপ্তার করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। অতিশী বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই বলে এসেছি, প্রয়োজনে জেলে বসেই সরকার চালাবেন মুখ্যমন্ত্রী। এমন কোনও আইন নেই যে তাতে বাধা দেবে। কারণ মুখ্যমন্ত্রী এখনও দোষী সাব্যস্ত হননি।’
দিল্লির আবগারি মামলায় আপ প্রধানকে মোট ন’বার সমন পাঠিয়েছিল ইডি। কিন্তু আট বারই হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। শেষ পাঠানো সমনে বৃহস্পতিবারই ইডি দপ্তরে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু হাজিরা না দিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন কেজরিওয়াল।
আদালতে পেশ করা আবেদনে কেজরিওয়াল বলেন, ‘ইডি নিশ্চয়তা দিক যে, তাদের তলবে সাড়া দিলে আমার বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ করা হবে না।’ আপের অভিযোগ, ইডির লক্ষ্য জিজ্ঞাসাবাদ নয়। এত দিন ধরেও তারা এই মামলায় কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে কোনও তথ্যপ্রমাণ পায়নি। তাই লোকসভা ভোটের আগে সমন পাঠিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে।