শেষ-১৬তে মেসির আর্জেন্টিনা, হেরেও প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে পোল্যান্ড

বিশ্বকাপ সফর এখনও জারি আর্জেন্টিনার। লিওনেল মেসির কেরিয়ারের শেষ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের যোগ্যতা অর্জন করল। তাদের সঙ্গে গ্রুপ-সি থেকে শেষ-১৬তে গেল পোল্যান্ডও। রবার্ট লেওয়ানডস্কিদের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই আক্রমণে উঠেছিল আর্জেন্টিনা। শুরুর দিকে রক্ষণ সামলাচ্ছিল পোল্যান্ড। ম্যাচের প্রথমার্ধে পোল্যান্ডের বক্সে একের পর এক আক্রমণ করে চলে আর্জেন্টিনা। তবুও গোলমুখ খুলতে পারেননি মেসিরা। মরণ বাঁচন ম্যাচে দ্রুত গোল তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছিল আর্জেন্টিনা। তবে পোলিশ গোলরক্ষক তাদের দূর্গ সামলাচ্ছিলেন দায়িত্ব সহকারে। পোল্যান্ড-আর্জেন্টিনা ম্যাচের প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য অবস্থায়। প্রথমার্ধে পোল্যান্ডের প্রাপ্তি সেজনির বেশ কিছু দারুণ সেভ। যার মধ্যে রয়েছে লিও মেসির পেনাল্টি আটকে দেওয়াও।

পোলিশ গোলকিপার ভয়চেক সেজনি এই ম্যাচের আগে মেসিকে হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, মেসিকে পড়ে নিয়েছেন তিনি। ফলে, তাঁর পেনাল্টি আটকে দেওয়ার জন্য ভালোভাবেই পড়াশোনা করেছেন সেজনি। আজ ম্যাচে সেই আত্মবিশ্বাসই ঝরে পড়ছিল সেজনির চোখে মুখে। ম্যাচের ৩৭ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। শট নেন মেসি। দারুণ ভাবে সেই শট রুখে দেন সেজনি। মেসিকে উল্টে ওই শট নেওয়ার সময় খানিকটা চাপে দেখা গিয়েছিল। সেজনি পেনাল্টি আটকানোর জন্য নিস্পলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন মেসির দিকে। আর তাঁর দস্তানায় দারুণ ভাবে আটকে গেলও মেসির পাঠানো বল। আত্মবিশ্বাসী সেজনি প্রমাণ করলেন তিনি মেসিকে নিয়ে যা বলেছিলেন, তা ঠিক।

প্রথমার্ধ যেখানে শেষ করেছিল আর্জেন্টিনা, দ্বিতীয়ার্ধ সেখানেই শুরু করেন মেসিরা। দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হওয়ার পর ৪৬ মিনিটে নহেল মোলিনার পাস থেকে আলেক্সিস ম্যাক আলিস্তারের গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। সেজনি জমি ঘেষা বলে বারবার সমস্যায় পড়ছিলেন। আর্জেন্টিনা সেটাকেই কাজে লাগায়। গড়ানো শটেই গোল ম্যাক আলিস্তারের। এর পর ম্যাচের ৬৭ মিনিটের মাথায় এনজো ফার্নান্ডেজের পাস থেকে জুলিয়ান আলভারেজের গোলে ২-০ এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। শেষ অবধি আর কোনও গোল পায়নি দুই দল। তবে আর্জেন্টিনা পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে আরও বেশি ব্যবধানে জিততে পারত, যদি না সেজনি বেশ কয়েকটা দারুণ সেভ করতেন।

পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে গোল দর্শন হয়নি লিও মেসির। তবে কাতার বিশ্বকাপের গ্রুপ-পর্বের শেষ ম্যাচে খেলতে নেমেই এক রেকর্ড গড়েছেন এলএম টেন। আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি দিয়েগো মারাদোনা দেশের জার্সিতে বিশ্বকাপে মোট ২১টি ম্যাচে খেলেছিলেন। কাতারে ৯৭৪ স্টেডিয়ামে সেই রেকর্ড ভেঙে দিলেন মেসি। বিশ্বকাপে মোট ২২টি ম্যাচে খেলার রেকর্ড গড়েছেন মেসি।

গ্রুপ-সি এর অপর ম্যাচে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে ২-১ গোলে জিতেও শেষ-১৬-তে যাওয়া হল না মেক্সিকোর। ম্যাচের ৪৭ মিনিটের মাথায় হেনরি মার্টিনের গোলে এগিয়ে যায় মেক্সিকো। ৫২ মিনিটে গোল ব্যবধান বাড়ান লুইস। অ্যাডেড টাইমে সৌদির হয়ে এক গোল শোধ করেন সালেম। যার ফলে গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে গেল মেক্সিকো। টেবল টপার হয়ে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে নামা পোল্যান্ড এক সময় মেক্সিকোর জন্য বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ার শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল। তবে শেষ অবধি সৌদি আরবের বিরুদ্ধে বড় জয় পেল না মেক্সিকো। ফলে তাদের সমান ৪ পয়েন্ট থাকা সত্ত্বেও গোল ব্যবধানে এগিয়ে শেষ-১৬-তে পা রাখল রবার্ট লেওয়ানডস্কির দল।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen + 13 =